Saturday, June 28, 2025
Homeরাজনীতিঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে শপথের দাবিতে Ishraque-এর আন্দোলন ভেস্তে গেল

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে শপথের দাবিতে Ishraque-এর আন্দোলন ভেস্তে গেল

প্রতিশ্রুত জনশপথ হয়নি, কর্মকর্তাদের সমর্থন না পাওয়ায় পিছু হটলেন বিএনপি নেতা

ঈদুল আজহার ঠিক আগে, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, শপথের ব্যবস্থা না করলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে কোনও ‘বহিরাগত প্রশাসক’ প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, জনগণের সামনে ‘জনশপথ’ নিয়ে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

তবে ঈদের পর আন্দোলনের গতি দ্রুত থেমে যায়। ‘আমরা ঢাকাবাসী’ ব্যানারে সংগঠিত আন্দোলন কোনও দৃশ্যমান জনসমর্থন বা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সহায়তা না পাওয়ায় মুখ থুবড়ে পড়ে।

গত ২২ জুন তাঁর অনুসারীরা ঘোষণা দেন, নগর ভবনের সকল দপ্তর খুলে দেওয়া হয়েছে, শুধুমাত্র প্রশাসক ও প্রকৌশল বিভাগের দপ্তর ব্যতীত।

কিন্তু রাজনৈতিক চাপ এবং প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে বৃহস্পতিবার ইশরাকপন্থীরা শেষ পর্যন্ত প্রশাসকের অফিস খুলে দেয়। ৪৩ দিন পর শাহজাহান মিয়া নিজের দপ্তরে ফিরে আসেন। তাঁকে স্বাগত জানান আগের সেই নেতারাই, যারা তাঁকে ‘অবাঞ্ছিত’ বলেছিলেন।

বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “শপথ ইস্যুতে ইশরাকের কৌশল ব্যুমেরাং হয়েছে। নাগরিক সেবা ব্যাহত করা, সংঘাত সৃষ্টি করা, এসব বিএনপির ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।”

তিনি আরও জানান, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নিরাপদে সরে আসার নির্দেশ দেয়।

অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও আন্দোলনের ভাঙন

আন্দোলনের মাঝেই বিভাজন দেখা দেয়। দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের খবর উঠে আসে, যা বিএনপির ভাবমূর্তিকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শুক্রবার স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আয়কর অফিস কিংবা অন্য সরকারি অফিসে যারা বিক্ষোভ করছে, তারা বিএনপির নয়। তারা নিজেদের স্বার্থে এসব করছে।”

তিনি বলেন, কেউ কেউ দলের নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে, যা ভবিষ্যতে মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

ইশরাক হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ এবং বার্তায়ও কোনো উত্তর মেলেনি।

কৌশল পরিবর্তন ও প্রশাসকের প্রত্যাবর্তন

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্মকর্তা-কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা জানান, ইশরাক হোসেন এখন প্রশাসকের সঙ্গে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

ইউনিয়নের সভাপতি আরিফ চৌধুরী বলেন, “মেয়র ইশরাক হোসেন বলেছেন, সব বিভাগেই সহযোগিতা করতে। মাঠপর্যায়ে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।”

সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বাবু বলেন, “আমরা এখন প্রশাসকের নির্দেশনাতেই কাজ করব, যেন সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকে।”

প্রশাসক শাহজাহান মিয়া বলেন, “আমরা পেছনে তাকাতে চাই না। সামনে অনেক কাজ। মশা নিয়ন্ত্রণ, নগর পরিচ্ছন্নতা এবং বাজেট এখন আমাদের অগ্রাধিকার।”

শুক্রবার ও শনিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটির অফিসগুলো খোলা ছিল। সকালের শিফটে অফিসারদের মশা নিয়ন্ত্রণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ লাইভ পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়।

জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. রাসেল রহমান জানান, এসব কার্যক্রম কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম থেকে প্রশাসক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেন। পরবর্তী নির্দেশনাতেও মশা নিয়ন্ত্রণ ও বাজেট প্রণয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

এই মুহূর্তে আন্দোলনের মূল রূপ পরিবর্তন হলেও এর রাজনৈতিক প্রভাব আগামী দিনে আরও বিশ্লেষণের দাবি রাখে।

RELATED NEWS

Latest News