পাকিস্তানে প্রাক-বর্ষার বৃষ্টিতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোয়াত নদীতে ভেসে যায় একটি পর্যটক দল, যার মধ্যে আটজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সোয়াত নদীর তীরে পিকনিক করছিল এক পরিবারের ১৬ সদস্য। হঠাৎ প্রবল পানির তোড়ে ভেসে যায় তাদের বেশিরভাগ। এখন পর্যন্ত তিনজনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানান প্রাদেশিক জরুরি পরিষেবার মুখপাত্র শাহ ফাহাদ।
প্রায় ১০০ জন উদ্ধারকর্মী ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে। নদীতে আটকে পড়া পর্যটকদের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যায়, তারা একটি উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে সাহায্যের জন্য আকুতি জানাচ্ছে, চারপাশে পানি বেড়েই চলেছে।
ফাহাদ জানান, সোয়াত উপত্যকায় পূর্ব থেকেই বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। তিনি জনগণকে এমন পরিস্থিতিতে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। উল্লেখ্য, সোয়াত উপত্যকা পাকিস্তানের অন্যতম জনপ্রিয় গ্রীষ্মকালীন পর্যটন কেন্দ্র।
দেশটির অন্যান্য অঞ্চলেও দুর্যোগ দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পূর্বাঞ্চলীয় পাঞ্জাব এবং দক্ষিণ সিন্ধু প্রদেশে বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনায় আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় উদ্ধার সংস্থাগুলো।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সপ্তাহজুড়ে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। সাধারণত পাকিস্তানে বর্ষা মৌসুম জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি নদী ও জলাশয়ের কাছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২২ সালে পাকিস্তানে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে এক-তৃতীয়াংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল এবং প্রাণ হারিয়েছিল ১,৭৩৯ জন।
এ বছরের পরিস্থিতি তেমন ভয়াবহ না হলেও, পরিবেশবিদ ও প্রশাসন সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নয়ন না হওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান ও সতর্কতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।