যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইরানবিষয়ক সামরিক পদক্ষেপ জনমতকে বিভক্ত করে ফেলেছে। সিএনএন পরিচালিত একটি সাম্প্রতিক জরিপ বলছে, মার্কিন নাগরিকদের মধ্যে ৫৬ শতাংশই ইরানে চালানো সাম্প্রতিক বিমান হামলার বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন।
সার্বিকভাবে, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমেরিকানদের আস্থার ঘাটতি স্পষ্ট। প্রায় ৬০ শতাংশ মনে করছেন, এই হামলার ফলে ইরানের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি হুমকি আরও বেড়ে যেতে পারে। মাত্র ২৭ শতাংশ বিশ্বাস করেন, এতে হুমকি কমবে।
এই জরিপটি সিএনএনের পক্ষে SSRS প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে। এতে দেখা যায়, রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে মতপার্থক্য প্রকট। ডেমোক্র্যাটরা হামলার বিরুদ্ধে এককাট্টা হলেও রিপাবলিকানদের মধ্যে বিভক্তি দেখা গেছে। বিশেষ করে তরুণ রিপাবলিকান ও স্বাধীন মতধারার ভোটাররা ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশয়ে আছেন।
এমনকি যারা হামলাকে সমর্থন করেন, তাদের মধ্যেও মাত্র ৫৫ শতাংশ মনে করেন এতে হুমকি হ্রাস পাবে।
সংলাপের চেষ্টা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিকরা। ৩৯ শতাংশ মনে করেন, হামলার আগে কূটনৈতিকভাবে আরও উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল। শুধু ৩২ শতাংশ মনে করেন যথেষ্ট চেষ্টা করা হয়েছিল।
জরিপটি পরিচালিত হয় রবিবার ও সোমবার, যখন ইরান প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়নি। অর্থাৎ, প্রতিক্রিয়ার আগে নাগরিকদের অভিমত সংগ্রহ করা হয়।
ট্রাম্পের সামরিক সিদ্ধান্তে ৫৫ শতাংশ আমেরিকানই সামান্য বা একেবারেই আস্থা রাখেন না। কেবল ৪৫ শতাংশই মনে করেন, তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে অধিকাংশ, অর্থাৎ ৬৫ শতাংশ মনে করেন, ভবিষ্যতের যেকোনো সামরিক পদক্ষেপের আগে কংগ্রেসের অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত।
বিশেষ করে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে এই দাবি প্রবল। ৮৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট এবং ৬৭ শতাংশ স্বাধীন ভোটার এই অবস্থান গ্রহণ করেছেন। রিপাবলিকানদের মধ্যেও দ্বিধা দেখা গেছে। ৩৯ শতাংশ মনে করেন অনুমোদন প্রয়োজন, ৩৮ শতাংশ মনে করেন প্রয়োজন নেই, আর ২৩ শতাংশ নিশ্চিত নন।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণেও একাধিক ভিন্নতা উঠে এসেছে। ৩৫ বছরের নিচে যারা, তাদের মধ্যে ৬৮ শতাংশই ইরানে হামলার বিরোধিতা করেছেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আছে যারা ট্রাম্পের ওপর একেবারেই আস্থা রাখেন না। প্রায় ৪৫ শতাংশ তরুণ ভোটার মনে করেন, ভবিষ্যতের সামরিক পদক্ষেপে কংগ্রেসের অনুমোদন নেওয়া উচিত।
এই সন্দেহের পেছনে মূল ভূমিকা রাখছে তরুণ রিপাবলিকান এবং স্বাধীন মনোভাবের নাগরিকরা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই জরিপ প্রমাণ করে যে, ট্রাম্প প্রশাসনের সামরিক নীতিতে অভ্যন্তরীণ বিভক্তি বাড়ছে এবং দেশের ভেতরে ট্রাস্ট ঘাটতি গভীর হচ্ছে।