Tuesday, June 24, 2025
Homeজাতীয়বন সংরক্ষণে সংবিধানের নির্দেশনা থাকলেও কার্যকর পদক্ষেপ নেই সরকারের

বন সংরক্ষণে সংবিধানের নির্দেশনা থাকলেও কার্যকর পদক্ষেপ নেই সরকারের

পরিকল্পনার সময় ভূমি ব্যবহারের সঠিক মূল্যায়ন না করাই বন ধ্বংসের অন্যতম কারণ বলে মত পরিবেশবিদদের

সরকার সংবিধানে বন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার স্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও প্রকল্প পরিকল্পনার সময় ভূমি ব্যবহারের সঠিক মূল্যায়ন ও বন ধ্বংসের পরিণতি বিবেচনায় নিচ্ছে না। এমন অভিযোগ করেছেন পরিবেশ ও আইনি বিশেষজ্ঞরা।

সোমবার (২৩ জুন) ঢাকার হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এক কর্মশালায় এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

“কোস্টাল ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট ফর ইকোসিস্টেম রিস্টোরেশন অ্যান্ড স্পেশাল ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেম (SDSS) টুলকিট” শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (বেলা)। সহযোগিতায় ছিল অক্সফাম বাংলাদেশ, কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার এবং ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স।

বেলার প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম বলেন, “সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদে বন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার কথা বলা হলেও সরকার প্রকল্প পরিকল্পনার সময় এসব বিবেচনায় নিচ্ছে না। কক্সবাজারে রেললাইন নির্মাণে ৭ লাখ ২০ হাজার গাছ ও ২৬টি টিলা ধ্বংসের ঘটনা তারই উদাহরণ।”

তিনি বলেন, বন আইন ১৯২৭ সালে প্রণীত, যেখানে ‘বন’ শব্দের সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই এবং বন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও স্পষ্ট নয়। সামাজিক বনায়ন বিধিমালা ২০০৪ এবং ২০১০ সালের সংশোধনী বাস্তবায়নেও ঘাটতি রয়েছে।

তাসলিমা ইসলাম বন আইনের সঙ্গে অন্যান্য বিরোধপূর্ণ আইনসমূহ সমন্বয়, ২০১৪ সালের বননীতি সংশোধন, বন প্রশাসনের পুনর্গঠন, বন ধ্বংসে দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং একটি পৃথক উপকূলীয় বন সংরক্ষণ নীতি প্রণয়নের সুপারিশ করেন।

কর্মশালায় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ বলেন, “SDSS টুল বন ব্যবস্থাপনায় নির্ভুলতা আনতে পারে, তবে এতে আইনি সংস্কার যুক্ত করাও জরুরি।”

অক্সফাম বাংলাদেশের জলবায়ু নীতি বিশেষজ্ঞ এসএম সাইফি ইকবাল বলেন, “উপকূলীয় অঞ্চলে মানবিক কার্যক্রম, বিশেষ করে গাছ কাটা ও চিংড়ি চাষ, বন ধ্বংসের প্রধান কারণ। প্রতিবছর ম্যানগ্রোভ বন ১ শতাংশ হারে হারিয়ে যাচ্ছে।”

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ওয়াসিউল ইসলাম বলেন, “সহ-ব্যবস্থাপনায় বননির্ভর জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নেই বললেই চলে।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আখতার হোসেন বলেন, “এই কাঠামোগত ঘাটতিগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, সংবিধানের নির্দেশনা কার্যকর করতে হলে এখনই আইনি সংস্কার ও কার্যকর বন ব্যবস্থাপনার দিকে জোর দিতে হবে।

  • বিষয়াদি সম্পর্কে আরও পড়ুন:
  • ঢাকা

RELATED NEWS

Latest News