বাংলাদেশ ক্রিকেটে আবারও শুরু হয়েছে নির্বাচনী বিতর্ক। ডিপিএলের পারফরম্যান্সে নজরকাড়া অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেনকে বাদ দিয়ে শ্রীলঙ্কা সফরের ওয়ানডে স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বিসিবি। আর এ সিদ্ধান্ত নিয়েই উঠেছে নানা প্রশ্ন।
ডিপিএলে প্রায় ৫০০ রান এবং ৩০ উইকেট নিয়ে সেরা পারফরমারদের তালিকায় ছিলেন আবাহনী লিমিটেডের অধিনায়ক মোসাদ্দেক। কিন্তু প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু জানালেন, “মিরাজ দলে থাকলে মোসাদ্দেকের জায়গা হয় না।”
শুধু মোসাদ্দেকই নন, উপেক্ষিত হয়েছেন নুরুল হাসান সোহান, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন এবং রাকিবুল হাসানও। অথচ তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ডিপিএলে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন।
সোহান করেছেন ৫২২ রান, গড় ৫৮, স্ট্রাইক রেট ৯৪। রাকিবুল ছিলেন মোসাদ্দেকের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি।
এদিকে, একাধিক ওপেনার যেমন তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ ইমন, মোহাম্মদ নাইম ও লিটন দাস সুযোগ পেয়েছেন। যদিও তাদের মধ্যে অনেকের ফর্ম নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন।
অন্যদিকে, লিটন দাসকে রাখা হয়েছে কেবলমাত্র টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক বলেই, এমন যুক্তি দিয়েছেন নির্বাচকরা। লিপুর কথায়, “টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ফর্ম ঠিক রাখতে লিটনকে ওয়ানডে খেলানো হচ্ছে।”
ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতে, এ সিদ্ধান্ত নির্বাচকদের “পছন্দনির্ভর নির্বাচন”কেই সামনে এনেছে।
মধ্যক্রমে এখন তৌহিদ হৃদয়, মিরাজ, হয়তো লিটন থাকবেন। কিন্তু অভিজ্ঞতা ও ধারাবাহিকতায় ঘাটতি রয়েই গেছে।
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, যদি মোসাদ্দেকের মতো একজন অলরাউন্ডার বাদ পড়েন, তাহলে আসলে বাংলাদেশ দলে দুইজন অলরাউন্ডার রাখাই কি সমস্যা?
যেখানে সাকিব আল হাসানের সময় একাধিক অলরাউন্ডার যেমন রিয়াদ, মিরাজ, নাসির ও মোসাদ্দেক একসাথে খেলেছেন, সেখানে হঠাৎ করে একজনেই যথেষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে কেন?
নির্বাচকরা বলছেন “প্রক্রিয়া”র কথা, কিন্তু পারফরম্যান্স উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।
যদি এই ধারা চলতে থাকে, তাহলে পারফর্মাররা শুধু দল থেকে নয়, ক্রিকেট থেকে হারিয়ে যাবেন। আর তখন “বড় ক্যানভাস” কথাটি থেকেও কোনো কাজে আসবে না।
বাংলাদেশ ক্রিকেট এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে। সময় এসেছে সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার। পারফরম্যান্সের মূল্যায়ন করে, গভীরতা তৈরি করে, ভবিষ্যতের দল গঠনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার।