ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার এম. রিয়াজ হামিদুল্লাহ আজ সোমবার বিকেলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কলকাতার নবান্ন প্রশাসনিক ভবনে সাক্ষাৎ করবেন।
সিরাজগঞ্জের ঐতিহাসিক কাচারী হাউস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি যে সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তার প্রেক্ষিতেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
ঢাকার কূটনৈতিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশ এই ঘটনাটিকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করছে, যা কোনো রাজনৈতিক বা ধর্মীয় উসকানির ফল নয়। হাইকমিশনার মুখ্যমন্ত্রীকে এই প্রেক্ষাপট স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করবেন বলে জানা গেছে।
কাচারী হাউস, যা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে পরিচিত, সেখানে ভাঙচুরের ঘটনায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সরকারও বিষয়টির গুরুত্ব স্বীকার করেছে, তবে তারা এটিকে রাজনৈতিক চশমায় না দেখে বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার আহ্বান জানিয়েছে।
হাইকমিশনার ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে এটি হবে প্রায় ৯ বছর পর প্রথম সরাসরি বৈঠক। সর্বশেষ ২০১৬ সালে তৎকালীন হাইকমিশনার সৈয়দ মুজ্জেম আলী মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপরে নিযুক্ত অন্যান্য কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে বৈঠকের চেষ্টা করেও ফল আসেনি।
আজকের বৈঠকে শুধু কাচারী হাউস নয়, বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে সীমান্তে উত্তেজনা, অননুমোদিত বাংলাদেশি নাগরিকদের সনাক্তকরণ ও প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ভারতের উদ্যোগ।
বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের ২,২১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত অঞ্চলকে আরও মানবিক, সহযোগিতামূলক ও অর্থনৈতিকভাবে কার্যকর করতে সংলাপের প্রস্তাবও আসতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে।
এই বৈঠক বাংলাদেশ সরকারের পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার এবং সরাসরি কূটনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টার অংশ বলে বিবেচিত হচ্ছে।