ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলাকে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।
রোববার ইস্তাম্বুলে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (OIC) এক বৈঠকের ফাঁকে তিনি বলেন, “তারা আমাদের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে একটি বড় রেড লাইন অতিক্রম করেছে।”
এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এল যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিশ্চিত করেছেন, আমেরিকান যুদ্ধবিমান তিনটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনা ইসরায়েলের নয় দিনের বিমান হামলার ধারাবাহিকতা।
আরাগচি বলেন, “সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাটি ঘটেছে কেবল গত রাতেই।” তিনি জানান, ফরদোতে অবস্থিত ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাতেও আঘাত হানা হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমি এখনো সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানি না, তবে সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। গত রাতের হামলাটি ছিল গুরুতর অপরাধ।”
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাবে হরমুজ প্রণালী বন্ধের পথে ইরান
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “এই পদক্ষেপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তায় বড় ধরনের আঘাত করেছে। আমরা আমাদের আত্মরক্ষায় প্রয়োজনীয় সব উপায় প্রয়োগ করব।”
হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “ইরান এখনই এই যুদ্ধ বন্ধে সম্মত হোক।”
তবে আরাগচি এই বক্তব্যকে গুরুত্বহীন বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “বিশ্ব ভুলে যাবে না, যখন কূটনৈতিক সমাধান খোঁজার প্রক্রিয়া চলছিল, তখনই যুক্তরাষ্ট্র এবং গণহত্যাকারী ইসরায়েলি বাহিনী মিলে একটি অবৈধ আগ্রাসন শুরু করেছিল। আমাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।”
আরাগচি যুক্ত করেন, “আমরা ছিলাম আলোচনার টেবিলে, কিন্তু আমাদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। তারা কূটনীতির ভাষা বোঝে না, কেবল হুমকি ও শক্তির ভাষা বোঝে।”
এদিকে ওআইসি সম্মেলনের আয়োজক দেশ তুরস্ক হুঁশিয়ার করে বলেছে, এই হামলা ইরান-ইসরায়েল সংঘাতকে বৈশ্বিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “বর্তমান পরিস্থিতি এমন এক রূপ নিতে পারে যা পুরো অঞ্চলকে বৈশ্বিক সংঘাতে ঠেলে দেবে। আমরা চাই না সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি বাস্তব হয়ে উঠুক।”
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার এই ধাপ আন্তর্জাতিক কূটনীতিকে আরও জটিল করে তুলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের করণীয় ও ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।