ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওলেক্সান্দার সিরস্কি রোববার জানিয়েছেন, রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার মাত্রা ও গভীরতা আরও বাড়ানো হবে। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী এখনো রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের কিছু অংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে সিরস্কি বলেন, “নিশ্চিতভাবেই আমরা চালিয়ে যাব। হামলার স্কেল ও গভীরতা আরও বাড়বে।” তিনি আরও জানান, কেবলমাত্র সামরিক লক্ষ্যবস্তুতেই আঘাত হানা হচ্ছে এবং তা বেশ কার্যকর হচ্ছে।
তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝখানে এই ঘোষণা এল এমন এক সময়ে, যখন শান্তি আলোচনায় দীর্ঘ সময় ধরে কোনো অগ্রগতি নেই। দুই পক্ষের মধ্যে শেষ সরাসরি বৈঠক হয়েছিল প্রায় তিন সপ্তাহ আগে এবং নতুন কোনো আলোচনার তারিখ নির্ধারিত হয়নি।
সিরস্কি বলেন, “আমরা কেবল প্রতিরক্ষায় বসে থাকলে কিছুই অর্জিত হবে না। এতে আমরা মানুষ ও ভূখণ্ড হারাতে থাকি।”
তিনি স্বীকার করেন, ড্রোন যুদ্ধের ক্ষেত্রে রাশিয়ার কিছু সুবিধা রয়েছে। বিশেষত ফাইবার-অপটিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত ড্রোন ব্যবহারে রাশিয়া এগিয়ে আছে, যা সহজে জ্যাম করা যায় না।
“এখানে, দুর্ভাগ্যবশত, তারা সংখ্যা ও ব্যবহারের ব্যাপ্তিতে এগিয়ে আছে,” বলেন সিরস্কি।
তবে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ছিল সিরস্কির সেই মন্তব্য, যেখানে তিনি বলেন, কুরস্ক অঞ্চলের প্রায় ৯০ বর্গকিলোমিটার এলাকা এখনো ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই অঞ্চলেই গত আগস্টে ইউক্রেন সাহসীভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে অভিযান চালায়।
তিনি বলেন, “এই পদক্ষেপগুলো শত্রুপক্ষের সম্ভাব্য আক্রমণের আগাম প্রতিক্রিয়া।”
রাশিয়া অবশ্য এই দাবিকে অস্বীকার করেছে। গত এপ্রিলেই মস্কো জানায়, তারা কুরস্ক অঞ্চলের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীর কোনো উপস্থিতি সেখানে নেই।
বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড দখলে রেখেছে। ২০২২ সালের আগ্রাসনের পর চারটি ইউক্রেনীয় অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ বলে দাবি করেছে মস্কো, পাশাপাশি ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়াও তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
কিয়েভ অভিযোগ করেছে, মস্কো ইচ্ছাকৃতভাবে একটি শান্তিচুক্তি ব্যাহত করছে, যাতে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া যায় এবং আরও অঞ্চল দখল করা সম্ভব হয়।