বাংলাদেশের বিচার বিভাগে প্রস্তাবিত সংস্কার বাস্তবায়ন হলে এটি একটি “নতুন ভোর” এনে দেবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার রাজধানীতে “বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও দক্ষতা” শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধান বিচারপতি ড. সাইয়েদ রেফাত আহমেদ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা অতীতের বাধা নিয়ে dwell না করে, সাহসিকতার সঙ্গে সামনে এগিয়ে যাব। শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাই আমাদের দায়িত্ব।”
তিনি বলেন, বিচার বিভাগকে নির্বাহী ও রাজনৈতিক প্রভাব থেকে রক্ষায় জেলাভিত্তিক বিচারক বদলির নতুন নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে।
তিনি আরও জানান, একটি পৃথক সচিবালয় গঠনের প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা বিচার বিভাগের কাঠামোগত স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করবে।
সংস্কারের অংশ হিসেবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে পূর্ণ কার্যকর করা হয়েছে বলেও জানান ইউনূস। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে বিচার বিভাগের জবাবদিহিতা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে।
প্রধান বিচারপতির ভূমিকাকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে তিনি বলেন, “তিনি প্রতিটি বিভাগের বিচারকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে সংস্কারে সম্মিলিত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন।”
এই সংস্কার প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সহায়তাকারীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে ইউনূস বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, ইউএনডিপি, সুইডেনসহ আন্তর্জাতিক অংশীদাররা উদারভাবে সহযোগিতা করেছে।
তিনি বলেন, “আমরা একটি কার্যকর, স্বাধীন ও দক্ষ বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই এই লক্ষ্য পূরণ হবে।”
সেমিনারে ইউনূস বলেন, “বিচার বিভাগ, স্বাধীনতা এবং দক্ষতা—এই তিনটি শব্দই একটি সভ্যতার ভিত্তি। জুলাইয়ের আন্দোলন আমাদের এই ভিত্তি নির্মাণের সুযোগ করে দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই মুহূর্ত আমাদের জন্য একটি রূপান্তরের সময়। এটি ইতিহাসে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গঠনের চাবিকাঠি হয়ে থাকবে।”
২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিতে তিনি জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানান।
আইনমন্ত্রী ড. আসিফ নজরুল ও অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানসহ অন্যান্য অতিথিরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।