টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী পাভেল দুরভ জানিয়েছেন, তিনি নিজের অর্জিত বিপুল সম্পদ রেখে যেতে চান নিজের শতাধিক সন্তানের জন্য। এই ঘোষণা তিনি দেন ফরাসি ম্যাগাজিন Le Point-এ প্রকাশিত একটি বিস্তৃত সাক্ষাৎকারে।
৪০ বছর বয়সী এই রুশ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা জানান, তার ছয়টি সন্তান বিভিন্ন সম্পর্ক থেকে জন্ম নিয়েছে, আর বাকিদের জন্ম হয়েছে স্পার্ম দান এর মাধ্যমে। দুরভ বলেন, তিনি কোনো সন্তানের মধ্যে পার্থক্য করেন না এবং সবাই সমান অধিকার পাবে তার সম্পত্তিতে। “তারা সবাই আমার সন্তান। আমি চাই না আমার মৃত্যুর পর তারা একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড়াক,” বলেন তিনি।
দুরভ আরও জানান, এই সম্পদের অধিকার তারা ৩০ বছর পর পাবে। “আমি চাই তারা সাধারণ মানুষের মতো জীবন কাটাক, নিজেদের গড়ে তুলুক, সৃষ্টিশীল হোক এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে আত্মনির্ভর হোক,” তিনি বলেন।
ব্লুমবার্গের তথ্য অনুযায়ী, দুরভের সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৩.৯ বিলিয়ন ডলার, যদিও তিনি এটিকে “তাত্ত্বিক” বলেই উল্লেখ করেছেন। তার মতে, “যেহেতু আমি টেলিগ্রাম বিক্রি করছি না, তাই এই পরিসংখ্যান আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়।”
টেলিগ্রামের একমাত্র মালিক দুরভ বর্তমানে দুবাই-এ বসবাস করছেন। তার মতে, “আমি যে কাজ করি, তাতে ঝুঁকি আছে। স্বাধীনতা রক্ষা করতে গিয়ে অনেক শত্রু তৈরি হয়, এমনকি ক্ষমতাবান রাষ্ট্রগুলোতেও। আমি আমার সন্তানদের সুরক্ষা দিতে চাই, চাই টেলিগ্রামও আমার নীতিতে বিশ্বাসী থাকুক।”
টেলিগ্রাম বর্তমানে প্রতি মাসে এক বিলিয়নের বেশি ব্যবহারকারী নিয়ে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম। এটি মূলত উচ্চমাত্রার এনক্রিপশন এবং সীমিত নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিচিত।
তবে দুরভ সম্প্রতি প্যারিসে গ্রেফতার হয়েছিলেন একাধিক অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে। অভিযোগে বলা হয়, টেলিগ্রাম মাদক পাচার, অর্থ পাচার এবং শিশু পর্নোগ্রাফি ছড়াতে সহায়ক হয়েছে। দুরভ এই অভিযোগগুলোকে “অযৌক্তিক” এবং “ভিত্তিহীন” বলে উল্লেখ করেন। তার ভাষায়, “যেহেতু অপরাধীরা টেলিগ্রামসহ অন্যান্য প্ল্যাটফর্মও ব্যবহার করে, তাই সেটি আমাদের অপরাধী বানায় না।”
