দেশজুড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ ফের বাড়তে শুরু করেছে। টানা বৃষ্টিপাত আর গরমে বাড়ছে এডিস মশার বংশবিস্তার। গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) আরও ২৪৮ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে একই সময়ে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৯২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ রোগী ৫৯ দশমিক দুই শতাংশ এবং নারী ৪০ দশমিক আট শতাংশ। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৩০ জন।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) সর্বাধিক ১০৪ জন ভর্তি হন। এরপর চট্টগ্রামে ৩৯ জন, ঢাকা দক্ষিণে ৩৫ জন, ঢাকা উত্তরে ২০ জন, ঢাকার বাইরে ঢাকা বিভাগে ১৮ জন, রাজশাহীতে ১৮ জন, খুলনায় ৭ জন, ময়মনসিংহে ৪ জন এবং রংপুরে ৩ জন রোগী ভর্তি হন। একই সময়ে হাসপাতাল থেকে ২১৬ জন রোগী ছাড়পত্র পেয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের অন্তত ১৩টি ওয়ার্ডে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব নির্ধারিত সীমার চেয়ে বেশি। বহুতল ভবনগুলোতে লার্ভার উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি, যা ৫৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে।
এছাড়া ঢাকার বাইরে বরিশালের বরগুনা জেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ তুলনামূলকভাবে বেশি বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর। এছাড়া ৪৫ শতাংশ জ্বরের রোগীর শরীরে চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়েছে।
গত বছর (২০২৩) দেশে রেকর্ডসংখ্যক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ছিল। জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ছিল এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং মৃত্যু হয় ৫৭৫ জনের। এর আগের বছর ২০২২-এ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ এবং মৃত্যু হয় এক হাজার ৭০৫ জনের।
ডেঙ্গুর বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লার্ভা ধ্বংসে জনসচেতনতা এবং স্থানীয় প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।