Sunday, June 22, 2025
HomeবিনোদনLittle Amelie: কান উৎসবে আলোচিত শিশু-কেন্দ্রিক দার্শনিক অ্যানিমেশন

Little Amelie: কান উৎসবে আলোচিত শিশু-কেন্দ্রিক দার্শনিক অ্যানিমেশন

জাপান ও বেলজিয়ামের সংস্কৃতির মিশেলে তৈরি ব্যতিক্রমী অ্যানিমেশন ছবিটি কান উৎসবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু

ফরাসি রূপকথার আবহে নির্মিত হলেও ‘Little Amelie’ নামটি শুনলেই অনেকে ২০০১ সালের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘অ্যামেলি’র পূর্বসূরি ভাবতে পারেন। বাস্তবে এটি একেবারেই আলাদা। পরিচালক মেইলিস ভালাদ ও লিয়ান-চো হানের নতুন এই অ্যানিমেশনটি বুদ্ধিদীপ্ত শিশু ও সংবেদনশীল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্মিত এক অনন্য গল্প।

সাম্প্রতিক কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রতিযোগিতা বিভাগে স্থান পাওয়া এই ছবিটি কেবল একটি গল্প নয়, বরং এটি অস্তিত্ব, জন্ম, মৃত্যু এবং আত্ম-চেতনার এক দার্শনিক অনুরণন। গল্পটি বেলজিয়ান লেখক অ্যামেলি নোথম্বের জীবনের উপর ভিত্তি করে তৈরি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ছবিটির শুরুতে দেখা যায়, অ্যামেলি নামের এক মেয়েশিশু জন্মের পরপরই ‘ভেজিটেটিভ’ অবস্থায় চলে যায়। চিকিৎসকের মন্তব্যে তার জীবন শুরু হয় সংকটের মধ্য দিয়ে। কিন্তু পরিবার তার পাশে থাকে।

সময় এগিয়ে ১৯৬৯ সালের ১৩ আগস্ট, জাপানের কানসাই অঞ্চলে ঘটে এক ছোট ভূমিকম্প। এই কম্পনের মাঝেই অলৌকিকভাবে জেগে ওঠে অ্যামেলি। তার পাশে এসে দাঁড়ান মাতাল স্বভাবের, কিন্তু আদরভরা দাদি। দাদির হাত ধরে সে পরিচিত হয় বেলজিয়ান চকোলেটের জগৎে।

এরপর তার জীবনে প্রবেশ করেন পরিবারে কাজ করা জাপানি ন্যানি নিশিও-সান। নিশিও-সানের মাধ্যমে ছোট্ট অ্যামেলি জাপানি লোককথা, দৈত্য আর প্রথার সঙ্গে পরিচিত হয়। এক পর্যায়ে ন্যানি তুলে ধরেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ স্মৃতি।

একদিকে জাপানের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি, অন্যদিকে বেলজিয়ামের কাব্যিকতা—এই দুইয়ের মিশেলে ‘লিটল অ্যামেলি’ হয়ে উঠেছে এক অপূর্ব মিশ্র সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। অ্যানিমেশনের ভিজ্যুয়াল চিত্রায়নও প্রশংসনীয়, যেন এরিক রোহমারের কোনো সিনেমা জলরঙে আঁকা হয়েছে।

তবে ছবিটি সহজপাচ্য নয়। ছোট্ট অ্যামেলি কখনো দর্শকের ভালোবাসা পায়, কখনো বিদ্রূপ। জীবন-মৃত্যুর সীমারেখা ঘুরেফিরে আসে বারবার। মৃত্যু ও শোককে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে গল্পকার স্মরণ করিয়ে দেন, ছোট শিশুরা মৃত্যুকে বুঝে ফেলে এক রকম আর না-বুঝেই আরেক রকম অনুভব করে।

চলচ্চিত্রটি শেষ পর্যন্ত এক রহস্যময় যাত্রা, যার সূচনা ব্যাখ্যা হয় কেবল ছবির একদম শেষ অংশে এসে। কিছু দর্শকের কাছে এটি ধৈর্যচ্যুতি ঘটাতে পারে, তবে যারা প্রতিটি দৃশ্য বিশ্লেষণ করতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য এটি এক রত্ন।

চলমান বিশ্বে যেখানে বড় স্টুডিওর টেমপ্লেট নির্ভর অ্যানিমেশন জনপ্রিয়, সেখানে ‘লিটল অ্যামেলি’ হাতে গড়া, সূক্ষ্ম আবেগময় চলচ্চিত্র হিসেবে এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

RELATED NEWS

Latest News