যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে সাবেক ডেমোক্র্যাট স্পিকার মেলিসা হর্টম্যান এবং তাঁর স্বামী মার্ক হর্টম্যানকে গুলি করে হত্যা করেছে এক বন্দুকধারী। রাজ্য গভর্নর টিম ওয়ালজ শনিবার (১৪ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং এটিকে একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা বলে অভিহিত করেছেন।
ঘটনায় আরও গুরুতর আহত হয়েছেন রাজ্যের সিনেটর জন হফম্যান ও তাঁর স্ত্রী। তারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গভর্নর জানিয়েছেন, তাদের অবস্থা উন্নতির দিকে গেলেও এখনও শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।
গভর্নর ওয়ালজ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “এটি ছিল রাজনৈতিক সহিংসতার একটি পরিকল্পিত ঘটনা। গণতন্ত্রে মতবিরোধ সমাধান হয় সংলাপের মাধ্যমে, অস্ত্র দিয়ে নয়।”
স্থানীয় পুলিশের বরাতে জানা গেছে, হামলাকারী নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে হর্টম্যান দম্পতির বাসায় প্রবেশ করে। সেখানে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলির পর সে পায়ে হেঁটে পালিয়ে যায়। পরে একটি পরিত্যক্ত গাড়ি থেকে অভিযুক্তের লেখা একটি ম্যানিফেস্টো এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের একটি ‘হিট লিস্ট’ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলছে, হামলাকারীর পরিকল্পনা আরও বড় পরিসরে ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধারকৃত তালিকায় অন্য জনপ্রতিনিধিদের নাম থাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, “এটি ছিল রাজ্য আইনপ্রণেতাদের ওপর পরিকল্পিত হামলা। এ ধরনের সহিংসতা যুক্তরাষ্ট্রে কখনোই সহ্য করা হবে না।”
মেলিসা হর্টম্যান মিনেসোটা হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর সাবেক স্পিকার ছিলেন এবং দীর্ঘদিন ধরে ডেমোক্র্যাট পার্টির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে রাজ্যজুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং হামলাকারীকে ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। নাগরিকদের সজাগ থাকার এবং সন্দেহজনক কাউকে দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
ঘটনার তদন্তে ইতোমধ্যে এফবিআই এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় সংস্থাও যুক্ত হয়েছে।
এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে রাজনীতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মতভেদ রাজনৈতিক সহিংসতায় রূপ নেওয়া গণতন্ত্রের জন্য এক অশনি সংকেত।