নতুন অ্যানিমেটেড ছবি ‘ইন ইয়োর ড্রিমস’ কীভাবে একটি পিৎজা বাক্সের আঁকিবুকি থেকে নেটফ্লিক্সের বড় বাজির ছবিতে পরিণত হলো, সেই গল্প শুনিয়েছেন পরিচালক অ্যালেক্স উ। অ্যানেসি আন্তর্জাতিক অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র উৎসবে ছবির প্রথম ঝলক প্রদর্শনের সময় পরিচালক এবং নির্মাতা দল এই অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।
‘ইন ইয়োর ড্রিমস’ ছবির কাহিনি দুই ভাইবোন স্টিভি ও এলিয়টকে ঘিরে, যারা নিজেদের স্বপ্নের জগতে প্রবেশ করে পৌরাণিক স্যান্ডম্যানকে খুঁজতে বের হয়। তাদের একমাত্র ইচ্ছা, একটি নিখুঁত পরিবার পাওয়া। অ্যাডভেঞ্চার ঘরানার ছবিতে দুই বিপরীত স্বভাবের ভাইবোনের ঝগড়াঝাঁটি এক সময় teamwork-এ রূপ নেয়। স্বপ্নের জগতে তারা মুখোমুখি হয় বিভিন্ন অদ্ভুত চরিত্রের, যেমন একটি ব্যঙ্গাত্মক স্টাফড জিরাফ, জোম্বি প্রাতঃরাশ, হটডগ দানব এবং দুঃস্বপ্নের রাণী নাইটমারা।
অ্যালেক্স উ জানিয়েছেন, ছবির ধারণাটি এসেছে তাঁর ব্যক্তিগত এক স্মৃতি থেকে। ছোটবেলায় তাঁর মা হঠাৎ বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ায় তিনি এবং তাঁর ভাই নানা রকম “পাগলাটে পরিকল্পনা” করতেন মাকে ফিরিয়ে আনার জন্য। সেই অনুভূতি থেকেই গল্পটির আত্মিক ভিত্তি তৈরি হয়েছে।
ছবির কণ্ঠশিল্পীদের তালিকায় রয়েছেন সিমু লিউ, ক্রিস্টিন মিলিওটি, ওমিদ জালিলি এবং গিয়া কারাইডেস। ছবির প্রোডাকশন ডিজাইন করেছেন স্টিভ পিলচার, ভিএফএক্স তত্ত্বাবধানে ছিলেন নিকোলা ল্যাভেন্ডার এবং অ্যানিমেশন পরিচালনা করেছেন সেবাস্টিয়ান কাপিজিমপাঙ্গা।
ছবির নির্মাণ প্রসঙ্গে অ্যালেক্স উ বলেন, “স্বপ্নের জগৎ দেখাতে গিয়ে আমাদের একটি বাস্তব ভিত্তির সঙ্গে সংযোগ রাখতে হয়েছে। বাস্তব জীবনের ঘটনা থেকেই স্বপ্ন তৈরি হয়। তাই আমাদের প্রতিটি সেট এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে তা বাস্তবের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে।”
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ‘ব্রেকফাস্ট টাউন’-এ সকালের খাবারগুলো জীবন্ত, তবে শহরের অবশিষ্ট অংশ তৈরি হয়েছে দুগ্ধ পাত্র, পপসিকল স্টিকসের মতো সাধারণ উপকরণ দিয়ে। এতে এক ধরনের শিশুতোষ কারুশিল্পের আবহ তৈরি হয়েছে।
ছবির ভিএফএক্স তত্ত্বাবধায়ক নিকোলা ল্যাভেন্ডার বলেন, “বিভিন্ন সেট ও চরিত্রের বৈচিত্র্য ছিল ছবির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিটি পরিবেশ ও চরিত্রের জন্য আলাদা করে অনেক মাস কাজ করতে হয়েছে। আলো, টেক্সচার, গভীরতা — প্রতিটি দিকেই আমাদের বাড়তি মনোযোগ দিতে হয়েছে।”
মূলধারার আইপি নির্ভর ছবির বাজারে অরিজিনাল গল্প তৈরির প্রসঙ্গে উ বলেন, “এখন এমন সময় যখন মূলধারার ছবিতে আইপি ভিত্তিক গল্পের ছড়াছড়ি। এর মাঝে অরিজিনাল গল্প তৈরি করাটা আলাদা নজর কেড়ে নিতে পারে। তাই এটাই অরিজিনাল গল্প তৈরির সেরা সময়।”
নেটফ্লিক্সের সমর্থন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার অভিজ্ঞতা বলছে নেটফ্লিক্সে সবকিছুই মানুষের সিদ্ধান্ত। অ্যালগরিদম দিয়ে গ্রিনলাইট দেয় না। তারা গল্পকে গুরুত্ব দেয়।”
ছবিটি ছোট স্ক্রিনে মুক্তি পাওয়া নিয়ে স্টিভ পিলচার বলেন, “বড় পর্দায় দেখার জন্য ছবিটি তৈরি করা হলেও বর্তমান বাস্তবতা ভিন্ন। টিভি এবং মোবাইলেও ভালো অভিজ্ঞতা দেওয়ার মতোই আমরা তৈরি করেছি।”
‘ইন ইয়োর ড্রিমস’ ছবিটি নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাবে আগামী ১৪ নভেম্বর।