ইংলিশ ক্লাব লিভারপুল ক্লাব ইতিহাসের সর্বোচ্চ অর্থমূল্যের চুক্তিতে বায়ার লেভারকুজেনের আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার ফ্লোরিয়ান উইর্টজকে দলে নিতে সম্মত হয়েছে। শুক্রবার (১৩ জুন) এ খবরটি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে লিভারপুল ১৩৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করবে। পারফরম্যান্সের উপর নির্ভরশীল অতিরিক্ত অর্থসহ মোট চুক্তির মূল্য দাঁড়াতে পারে ১৫৭ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত। যা হলে এটি ব্রিটিশ ফুটবলেরও রেকর্ড চুক্তিতে পরিণত হবে।
এদিকে জার্মান সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, নির্ধারিত শর্ত পূরণ হলে চুক্তির মোট মূল্য ১৭২ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে।
২২ বছর বয়সী জার্মান তারকাকে দলে নিতে লিভারপুলের ব্যয় এই অর্থে চেলসির ২০২৩ সালে ব্রাইটনের ময়সেস কাইসেদোর জন্য নির্ধারিত ১৫৬ মিলিয়ন ডলারের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। উল্লেখ্য, সে সময় কাইসেদো লিভারপুলের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
এর আগে ২০২২ সালে উরুগুয়ের স্ট্রাইকার ডারউইন নুনেজ ছিলেন লিভারপুলের সবচেয়ে ব্যয়বহুল খেলোয়াড়। তবে নুনেজের ক্ষেত্রে কিছু নির্ধারিত শর্ত পূরণ না হওয়ায় ১১৫ মিলিয়ন ডলারের সম্পূর্ণ অর্থ এখনও পরিশোধ করা হয়নি।
ম্যানচেস্টার সিটি শুরুতে উইর্টজকে দলে নিতে আগ্রহী ছিল। তবে ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের কারণে শেষ পর্যন্ত তারা আলোচনায় সরে দাঁড়িয়েছে বলে জানা গেছে।
উইর্টজ সম্পর্কে প্রশংসা করেছেন রিয়াল মাদ্রিদের নতুন কোচ ও সাবেক লিভারপুল মিডফিল্ডার জাবি আলোনসো। তিনি বলেছিলেন, উইর্টজ বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়দের একজন।
লিভারপুলের নতুন কোচ আর্নে স্লটের অধীনে প্রথম মৌসুমে দলটি খুব বেশি খরচ করেনি। এবার ইংলিশ শীর্ষ লিগের ২০তম শিরোপা জয়ের পর শক্তি বাড়াতে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করছে ক্লাবটি।
উইর্টজর সতীর্থ জেরেমি ফ্রিমপং ইতিমধ্যে লিভারপুলে যোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি বোর্নমাউথের বামপন্থী ডিফেন্ডার মিলোস কেরকেজকেও আনার আলোচনা অগ্রগতির শেষ ধাপে রয়েছে বলে জানা গেছে।
২০২৩-২৪ মৌসুমে বায়ার লেভারকুজেনের সেরা মৌসুমে বড় ভূমিকা পালন করেছেন উইর্টজ। ঐতিহাসিকভাবে প্রথম বুন্দেসলিগা শিরোপা ও জার্মান কাপ জিতে দলটি মৌসুমে অপরাজিত ছিল। একমাত্র হারটি ইউরোপা লিগের ফাইনালে আতালান্তার বিপক্ষে আসে, যেখানে তারা ত্রিমুকুট জয়ের স্বপ্ন থেকে বঞ্চিত হয়।
মৌসুম শেষে বুন্দেসলিগার বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতিও পান উইর্টজ। এদিকে বায়ার্ন মিউনিখ পুনরায় জার্মান ফুটবলে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে। ফলে লেভারকুজেন থেকে আরও খেলোয়াড়ের বিদায় সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।
লিভারপুলের নতুন এই রেকর্ড সাইনিং আর্নে স্লটের পরিকল্পনায় ঠিক কোন ভূমিকায় আসবেন তা এখনও পরিষ্কার নয়। লেভারকুজেনে সাধারণত কেন্দ্রীয় স্ট্রাইকারের পেছনে খেলেছেন তিনি। জার্মানি জাতীয় দলে অবশ্য প্রায়ই উইঙ্গার হিসেবে মাঠে নামেন।
১৯৭ ম্যাচে ৫৭ গোল ও ৬৫ অ্যাসিস্ট করা উইর্টজ প্রমাণ করেছেন যে তিনি শুধু সুযোগ তৈরি নয়, গোল করার ক্ষেত্রেও সমান কার্যকর। ফলে লিভারপুলের আক্রমণভাগে নতুন মাত্রা যোগ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
