ইসরায়েলি নৌবাহিনী প্রথমবারের মতো ইয়েমেনের হুতি-নিয়ন্ত্রিত হোদেইদা বন্দরে হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবার (১০ জুন) এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ইয়েমেনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘ইসরায়েলি নৌবাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্রবাহী জাহাজ হুতি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মালিকানাধীন সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। বন্দরটি সামরিক কাজে ব্যবহৃত হওয়ায় এ হামলা করা হয়েছে।’’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বন্দরের মাধ্যমে অস্ত্র পরিবহন করা হচ্ছিল।
অন্যদিকে ইয়েমেনের আল-মাসিরাহ টেলিভিশন জানিয়েছে, ‘‘ইসরায়েলি শত্রু হোদেইদা বন্দরের ডকে দুটি হামলা চালিয়েছে।’’
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেছেন, ‘‘আমরা হুতি সন্ত্রাসী সংগঠনকে সতর্ক করেছি যে, তারা যদি ইসরায়েলের দিকে হামলা চালানো অব্যাহত রাখে, তবে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হবে এবং নৌ ও আকাশপথে অবরোধের মুখে পড়বে।’’
এর আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল অভিচাই আদরী আরবিতে এক পোস্টে জানান, ‘‘হুতি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কর্তৃক সামুদ্রিক বন্দর ব্যবহারের কারণে আমরা রাস ইসা, হোদেইদা ও সালিফ বন্দরের সকল ব্যক্তিকে অবিলম্বে নিরাপত্তার স্বার্থে সেগুলো ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’’
উল্লেখ্য, গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা একাধিকবার ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হামাসের হামলার পর এই পরিস্থিতির সূচনা হয়।
এরপর গাজায় দু’মাসের যুদ্ধবিরতির সময় হুতিরা হামলা বন্ধ রাখলেও মার্চে যুদ্ধবিরতি শেষ হলে আবার হামলা শুরু করে।
ইসরায়েল এর জবাবে ইয়েমেনের বিভিন্ন স্থানে একাধিক হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে রাজধানী সানার বিমানবন্দর, বিভিন্ন বন্দর এবং সামরিক স্থাপনায় হামলা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
চলতি বছরের মে মাসের শুরুতে হুতিদের ছোড়া এক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের সীমানায় আঘাত হানে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন এবং টার্মিনালের কাছে বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়।
গত মাসেও ইসরায়েলি বিমান হামলায় সানার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সর্বশেষ রয়ে যাওয়া বিমানটি ধ্বংস হয়।
এছাড়া ইসরায়েল হুতি নেতাদের লক্ষ্য করে হামলারও হুমকি দিয়েছে।
২০১৫ সাল থেকে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। এই সংঘাতে কয়েক লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ইয়েমেনে বড় ধরনের মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে ২০২২ সালে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর সাম্প্রতিক সময়ে সংঘাতের মাত্রা কিছুটা কমে এসেছে।