ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পটভূমিতে পাকিস্তান চলতি বছরের বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে ২০ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি করেছে। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ৬২ বিলিয়ন ডলারের বাজেট পেশ করেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব।
গত মে মাসে পরমাণু অস্ত্রধারী প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে চারদিনের সংঘাতে অন্তত ৭০ জন নিহত হয়। কয়েক দশকের মধ্যে এটিই ছিল সবচেয়ে বড় ধরনের সহিংসতা। পরে একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমিত হয়।
নতুন বাজেটে সামরিক খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে ২.১২ ট্রিলিয়ন রুপি থেকে ২.৫৫ ট্রিলিয়ন রুপি করা হয়েছে, যা বাজেটের ১৪ শতাংশ।
এদিকে গত শুক্রবার পাকিস্তান সরকার জানিয়েছিল, দেশটি ৪০টি নতুন চীনা যুদ্ধবিমান এবং আধুনিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সংগ্রহের বিষয়ে আলোচনা চালাচ্ছে।
২০২৩ সালে রাজনৈতিক সংকট এবং অর্থনৈতিক মন্দার কারণে পাকিস্তান প্রায় দেউলিয়া হয়ে পড়েছিল। পরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৭ বিলিয়ন ডলারের জরুরি ঋণ পেয়ে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে পেতে শুরু করে। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বেড়েছে।
অর্থমন্ত্রী আওরঙ্গজেব বাজেট ঘোষণার আগে বলেন, “আমরা সঠিক পথে এগিয়েছি। যে কোনও পরিবর্তন বাস্তবায়নে দুই থেকে তিন বছর সময় লাগে। আমরা ভালো অবস্থানে রয়েছি।”
তবে গত অর্থবছরের (৩০ জুন শেষ) লক্ষ্য পূরণে পাকিস্তান পিছিয়ে পড়েছে। অর্থনৈতিক জরিপ অনুযায়ী, দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২.৭ শতাংশে দাঁড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যেখানে গত বাজেটে ৩.৬ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
আগামী অর্থবছরের জন্য ৪.২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার।
বাজেটে ৮ ট্রিলিয়ন রুপি ঋণের সুদ পরিশোধে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের ২৪ কোটি জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশই দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। দেশের সাক্ষরতার হার বর্তমানে ৬১ শতাংশ।
এই বাজেট হচ্ছে সরকারের ক্ষমতায় আসার পর দ্বিতীয় বাজেট। গত বছরের নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে কারাবন্দি করার প্রেক্ষাপটের মধ্য দিয়ে এই সরকার গঠিত হয়েছিল। ইমরান খান এই মামলাগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন।