স্বাধীন, শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধশালী গণতন্ত্র গড়ে তুলতে বিচারব্যবস্থার সংস্কারকে অন্যান্য খাতের সংস্কারের ভিত্তি হিসেবে দেখতে হবে। এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
মঙ্গলবার নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ২০২৫ বার্ষিক শাসন ও মানবাধিকার সম্মেলনের উদ্বোধনী প্যানেলে ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘‘একটি অগণতান্ত্রিক ও অন্যায় শাসনব্যবস্থা থেকে সুশাসন ও স্থিতিশীল গণতন্ত্রে উত্তরণের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম বিচারব্যবস্থাকে মুক্ত ও স্বাধীন করতে হবে। এর মাধ্যমে অন্য সকল খাতে সংস্কারের পথ সুগম হবে।’’
প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন ও বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করতে হবে, যেখানে জনগণ ন্যায়বিচারের জন্য নির্ভর করতে পারে। অন্যথায়, ন্যায়বিচার অনুপস্থিত হলে তা রাস্তায় প্রতিষ্ঠা পাওয়ার চেষ্টা চালাবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হলে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও মানবাধিকার বিকশিত হয়।
তিনি জানান, দায়িত্ব গ্রহণের সময় তিনি ৪২ লাখের বেশি মামলার দীর্ঘসূত্রিতার উত্তরাধিকার পেয়েছেন। সেই সঙ্গে বিচারব্যবস্থার প্রতি গভীর অবিশ্বাস ছিল, যা দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে সৃষ্টি হয়েছে।
জুলাই মাসের গণআন্দোলনের চেতনা প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘এই আন্দোলনের শহীদ তরুণ-তরুণীদের স্মৃতি আমাকে ন্যায় ও সাম্যের পথে চলার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। বিচারব্যবস্থার রূপান্তরই আমার অন্যতম অঙ্গীকার।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘বাংলাদেশে গত নয় মাসের কাজ একটি উদাহরণ, কিভাবে আইনের শাসনের সংস্কার রূপান্তরের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে এবং কীভাবে জাতিসংঘ ও বিশেষ করে ইউএনডিপি এই প্রক্রিয়াকে সহযোগিতা করেছে।’’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘ইউএনডিপি আমাদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য, ডিজিটাল রূপান্তর, নৈতিকতা বজায় রাখা, জনগণকেন্দ্রিক পদ্ধতি এবং দক্ষতার ক্ষেত্রে কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে।’’
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি সুন্দর ভবিষ্যতের উদাহরণ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। চ্যালেঞ্জিং পরিবেশেও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতি আমাদের অঙ্গীকার দেশের জনগণের জন্য আশা ও আস্থার প্রতীক হয়ে থাকবে।