Monday, June 23, 2025
Homeজাতীয়যুক্তরাজ্য সফরে যাচ্ছেন অধ্যাপক ইউনূস, আলোচনায় অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও পাচারকৃত অর্থ ফেরতের...

যুক্তরাজ্য সফরে যাচ্ছেন অধ্যাপক ইউনূস, আলোচনায় অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও পাচারকৃত অর্থ ফেরতের বিষয়

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে

চার দিনের সরকারি সফরে আগামীকাল সোমবার সন্ধ্যায় যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ১০ থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত চলবে এ সফর।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নবায়ন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি পাচারকৃত অর্থ এবং বিদেশে থাকা সম্পদ ফেরত আনার বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পাবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক জানান, ৯ জুন অধ্যাপক ইউনূস লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং ১৪ জুন দেশে ফিরবেন।

তিনি বলেন, “এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফর। অধ্যাপক ইউনূস মহামান্য কিং চার্লস তৃতীয় ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়া আরও উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।”

তিনি আরও জানান, “বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক গভীর এবং বহুমাত্রিক। এই সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।”

সফরের সময় কিং চার্লস তৃতীয় আনুষ্ঠানিকভাবে অধ্যাপক ইউনূসকে ‘হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ প্রদান করবেন। মানুষের মধ্যে শান্তি, টেকসই উন্নয়ন এবং পরিবেশগত ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় তাঁর আজীবন প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দেয়া হবে।

১২ জুন লন্ডনের সেন্ট জেমস প্যালেসে এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৪ সালে এ পুরস্কার পেয়েছিলেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন।

এছাড়া, অধ্যাপক ইউনূস যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি, শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, যুক্তরাজ্য একটি নেতৃস্থানীয় গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রতি গুরুত্ব দেয়। এ কারণে এই সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

সফরে বাংলাদেশের চলমান সংস্কার প্রচেষ্টা, গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা এবং সুশাসনের প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হবে।

তিনি আরও বলেন, “একজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে অধ্যাপক ইউনূসের বিশ্বব্যাপী ইতিবাচক ভাবমূর্তি রয়েছে। তাঁর এই সফর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করবে।”

সফরে জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন, রোহিঙ্গা সংকট এবং অভিবাসন বিষয়েও আলোচনা হবে।

এছাড়া, ব্রিটিশ দক্ষতা এবং সম্পদ ব্যবহার করে বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়টিও এজেন্ডায় থাকবে।

অধ্যাপক ইউনূস কমনওয়েলথ এবং আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থার মহাসচিবদের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

পাবলিক ডিপ্লোমেসির অংশ হিসেবে তিনি ১১ জুন চ্যাথাম হাউজে একটি মূল বক্তৃতা দেবেন। সেখানে বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি, গণতান্ত্রিক রূপান্তর এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মানসুর জানিয়েছেন, এই সফরের সময় পাচারকৃত অর্থ ও সম্পদ ফেরত আনার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে উত্থাপন করা হবে।

সরকারের হিসাবে, আগের সরকারের আমলে বছরে আনুমানিক ১৬ বিলিয়ন ডলার অবৈধভাবে বিদেশে পাচার হয়েছে।

এ নিয়ে ইতিমধ্যে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনারের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস।

RELATED NEWS

Latest News