চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুতে পার্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন ও একটি সিএনজি অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। গতকাল রাতে (৫ জুন) এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে একজন দুই বছরের শিশু এবং অটোরিকশার চালকও রয়েছেন।
চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আফতাব উদ্দিন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত অটোরিকশাচালক মো. তুষার (২৫), চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর পূর্ব গোমদন্ডী এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয় জান আলী রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার মো. নিজাম উদ্দিন জানান, লোকোমাস্টারের অবহেলার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তার ভাষ্য অনুযায়ী, কালুরঘাট সেতুর আগে ট্রেন থামার কথা ছিল এবং নির্ধারিত চেকপোস্টে সাইন ইন করার পর ধীরে এগোনোর নিয়ম ছিল। কিন্তু এসব প্রটোকল উপেক্ষা করে ট্রেনটি ৪০ কিলোমিটার গতিতে সেতু অতিক্রম করতে যায়, যেখানে সর্বোচ্চ গতি হওয়া উচিত ছিল ১০ কিলোমিটার।
সেতুর বিপরীত পাশে একটি যানবাহন নষ্ট হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল এবং অন্যান্য কয়েকটি গাড়িও আটকে যায়। সেই সময় রেলওয়ের সংকেত বাহক লাল পতাকা দেখিয়ে ট্রেন থামাতে চেষ্টা করলেও ট্রেনচালক তা উপেক্ষা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
দুর্ঘটনায় আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিএমসিএইচ) চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জুনায়েত কাউসার জানান, উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য যানবাহনের মধ্যে রয়েছে দুইটি সিএনজি অটোরিকশা, একটি মাইক্রোবাস, দুইটি মোটরসাইকেল ও একটি আইসক্রিম ভ্যান।
বোয়ালখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, উদ্ধারকাজে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কাজ করছেন। এখন পর্যন্ত একটি সিএনজি, একটি পিকআপ ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। আরও কয়েকটি যানবাহন ট্রেনের নিচে আটকে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে পূর্বাঞ্চল বিভাগের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমানকে।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন বিভাগীয় চিকিৎসা কর্মকর্তা (ডিএমও), বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ (ডিইএন-১), এবং বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ডিএমই লোকো)। কমিটিকে ৬ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
