ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আবারও ফিরল আন্তর্জাতিক ফুটবল। ঈদের ঠিক আগে হাজারো দর্শকের সামনে আয়োজিত এই ম্যাচে ভুটানকে ২–০ গোলে হারিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে ফিরল বাংলাদেশ জাতীয় দল। ম্যাচটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দর্শকদের উচ্ছ্বাস ও খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো।
বুধবার বিকেলের ম্যাচ ঘিরে জাতীয় স্টেডিয়ামের চারপাশ ছিল উৎসবমুখর। সরকারি ছুটির আগের দিন হওয়া সত্ত্বেও হাজারো দর্শক গ্যালারিতে উপস্থিত হন খেলা উপভোগ করতে। কেউ টিকিট নিয়ে, কেউবা খুঁজে ফিরেছেন টিকিট—দর্শকের ভিড় ছিল অসাধারণ। গ্যালারির কয়েকটি ফটক ভেঙে অনেকে ভিতরে ঢুকে পড়েন, যার ফলে সাময়িক বিশৃঙ্খলাও দেখা যায়।
বাংলাদেশ দল মাঠে পৌঁছানোর আগেই চারদিকে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে হামজা চৌধুরীকে ঘিরে দর্শকদের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। ওয়ার্মআপের সময় থেকেই প্রতিটি পাস, প্রতিটি ছোঁয়ায় করতালি ও উল্লাসে মুখর ছিল গ্যালারি।
খেলার ষষ্ঠ মিনিটেই গোল করে দলকে এগিয়ে দেন হামজা চৌধুরী। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার দুর্দান্ত ক্রস থেকে হেড করে বল জালে পাঠান এই মিডফিল্ডার। এটি ছিল তাঁর হোম ডেবিউ, আর সেই ম্যাচেই গোল করে বুঝিয়ে দেন জাতীয় দলে তাঁর গুরুত্ব।
বাংলাদেশ প্রথমার্ধে একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও দ্বিতীয় গোলটি আসে বিরতির ঠিক পরেই, ৪৮তম মিনিটে। মিডফিল্ডার সোহেল রানা দুর্দান্ত এক বাম পায়ের শটে বল জালে জড়িয়ে দেন। দূরপাল্লার এই শট গোলরক্ষকের নাগালের বাইরে ছিল। গ্যালারিতে তখন আবারও উল্লাসের ঢেউ।
এরপর আল আমিন, ফয়সাল আহমেদ ফাহিমসহ একাধিক আক্রমণাত্মক খেলোয়াড় মাঠে নামান কোচ। তরুণ উইঙ্গার ফাহমেদুল ইসলাম বাম প্রান্ত দিয়ে চমৎকার কিছু ড্রিবল ও ক্রস দেন, যা দর্শকদের নজর কাড়ে।
ভুটান পুরো ম্যাচজুড়ে বাংলাদেশের গতি ও প্রেসারের সঙ্গে তাল মেলাতে পারেনি। তারা মাত্র একবারই প্রকৃত সুযোগ পায় ইনজুরি টাইমে, কিন্তু তা থেকে গোল আদায় করতে ব্যর্থ হয়।
ম্যাচের একপর্যায়ে একজন দর্শক মাঠে ঢুকে হামজা চৌধুরীর সঙ্গে সেলফি তুলতে ছুটে যান, তবে নিরাপত্তা কর্মীরা দ্রুত তাঁকে সরিয়ে নেন। ম্যাচ শেষে আরেক দর্শক মাঠে ঢুকে পড়েন।
বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ২–০ ব্যবধানে ম্যাচটি জিতে মাঠ ছাড়ে। তারা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে, কোন গোল হজম করেনি এবং প্রমাণ করে দেয় ঈদের আগে জাতীয় স্টেডিয়ামে আবারও ফুটবল জাগছে।