Sunday, June 22, 2025
Homeআন্তর্জাতিকমার্কিন সাবেক মুখপাত্র: ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধাপরাধ করেছে, গণহত্যা নয়

মার্কিন সাবেক মুখপাত্র: ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধাপরাধ করেছে, গণহত্যা নয়

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার স্পষ্ট করে বলেছেন, “নিঃসন্দেহে ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধ করেছে।” সোমবার স্কাই নিউজের ট্রাম্প১০০ পডকাস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তবে মিলার একে গণহত্যা বলে মানতে রাজি নন। তার ভাষায়, “আমি মনে করি না এটি গণহত্যা, কিন্তু নিশ্চিতভাবেই এটা সত্য যে ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধ করেছে।”

মিলার গত বছর গাজায় ইসরায়েলের অভিযানকে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে বারবার সমর্থন করে এসেছেন। সে সময় তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিভিন্ন প্রশ্নে তর্কে জড়ান।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো যেখানে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলেছে, সেখানে মিলারের এই মন্তব্য নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

অস্ত্র সহায়তা প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র

মিলারের এই স্বীকারোক্তি এমন এক সময়ে এল, যখন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে ধারাবাহিকভাবে অস্ত্র সহায়তা দিয়ে আসছে। অথচ মার্কিন আইন অনুযায়ী, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, তাদের সহায়তা নিষিদ্ধ।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৪ হাজার ৩৮১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং এক লাখ ২৪ হাজার ৫৪ জন আহত হয়েছেন। দুই কোটির বেশি মানুষের বসবাসকারী গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।

মিলার তার বক্তব্যে জানান, ইসরায়েল অনেক ঘটনা তদন্ত করছে বলে দাবি করেছে, তবে দীর্ঘ সময় পরও দায়ী কোনো সেনাকে জবাবদিহির আওতায় আনা হয়নি।

নিজের ভূমিকা নিয়ে মিলারের পর্যালোচনা

মিলার বলেন, তিনি নিজের মত প্রকাশ করছিলেন না বরং প্রশাসনের বক্তব্য উপস্থাপন করছিলেন। “আপনি প্রেসিডেন্ট ও প্রশাসনের পক্ষে কথা বলেন। নিজস্ব মত প্রকাশ করতে পারেন না,” বলেন তিনি।

তিনি আরও জানান, বাইডেন প্রশাসনের ভেতরে ইসরায়েলকে ঘিরে বিভিন্ন ধরণের মতভেদ ছিল। কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য ছিল তীব্র, আবার কিছু বিষয়ে তা ছিল তুলনামূলকভাবে ছোট।

মিলার জানান, যুক্তরাষ্ট্র আরও অনেক কিছু করতে পারত যুদ্ধ থামাতে এবং নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে।

ফিলিস্তিনি পক্ষের প্রতিক্রিয়া

মিলারের এই স্বীকারোক্তির পর ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, “এই বক্তব্য ইসরায়েলের অপরাধ প্রমাণ করে এবং যুক্তরাষ্ট্রকেও এ অপরাধের সক্রিয় অংশীদার হিসেবে চিহ্নিত করে।”

হামাস আন্তর্জাতিক আদালত ও সংগঠনগুলোকে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন ডন-এর অ্যাডভোকেসি পরিচালক রায়েদ জারর বলেন, “মিলার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় চুপ করে ছিলেন, অথচ এখন তিনি অপরাধ স্বীকার করছেন। এটা শুধু ভণ্ডামি নয়, বরং সহায়তা প্রদানকারীদেরও অপরাধী করে তোলে।”

তিনি জানান, যারা গণহত্যায় সাহায্য করে, তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের আওতায় আনা উচিত।

সূত্র: আল-জাজিরা

RELATED NEWS

Latest News