রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি নিরসনে ইস্তানবুলে অনুষ্ঠিত হলো আলোচনার দ্বিতীয় দফা। টিয়া-র মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে অংশ নেন দুই পক্ষের শীর্ষ পর্যায়ের আলোচকরা। প্রায় দুই ঘণ্টা বিলম্বের পর শুরু হওয়া বৈঠক চলে এক ঘণ্টারও বেশি সময়।
আলোচনার পর উভয় পক্ষই নিশ্চিত করেছে, একটি বৃহৎ পরিসরের বন্দি বিনিময় চুক্তিতে সম্মত হয়েছে তারা। রুশ পক্ষ জানিয়েছে, “প্রথম ধাপে গুরুতর আহত ও অসুস্থ বন্দিদের ‘অল ফর অল’ নীতিতে বিনিময় করা হবে। একই নীতিতে ২৫ বছরের নিচে থাকা তরুণ সৈন্যদেরও বিনিময় করা হবে।”
তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাশিয়া এখনো নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি। বৈঠকে মস্কোর পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হলেও তা আগে থেকে ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানত না। আলোচনা চলাকালেই রুশ প্রতিনিধি দল এই প্রস্তাব হস্তান্তর করে।
ইউক্রেনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই প্রস্তাব খতিয়ে দেখতে এক সপ্তাহ সময় লাগবে এবং পরবর্তী করণীয় তখনই নির্ধারণ করা হবে।
আলোচনার পর ইউক্রেন নতুন এক প্রস্তাব দেয়—জুন মাস শেষ হওয়ার আগেই নেতৃত্ব পর্যায়ে তৃতীয় দফার আলোচনা করার। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এই প্রস্তাবিত বৈঠক ইস্তানবুল অথবা আঙ্কারায় আয়োজন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, “আমি চাই প্রেসিডেন্ট পুতিন, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও আমন্ত্রণ জানানো হোক। সবাইকে একত্রিত করে ইস্তানবুলকে শান্তির কেন্দ্র বানাতে চাই।”
এই আলোচনার প্রেক্ষাপটে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—এটি এমন এক সময়ে হয়েছে যখন মাত্র একদিন আগেই ইউক্রেন রাশিয়ার পারমাণবিক সক্ষম বোমারু ঘাঁটিতে নজিরবিহীন ড্রোন হামলা চালিয়েছে। জবাবে রাশিয়া ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে রাতভর ৪৭০টির বেশি ড্রোন এবং ৭টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধ যত গভীর হচ্ছে, ততই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শান্তি উদ্যোগ গ্রহণের চাপ বাড়ছে। তবে বাস্তব ফলাফল নির্ভর করছে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তরিক আলোচনার ওপর।