Sunday, June 22, 2025
Homeজাতীয়শ্যামলী যেতে ওঠা মোটরসাইকেলে, ঘোড়াশালে ধর্ষণের শিকার নারী

শ্যামলী যেতে ওঠা মোটরসাইকেলে, ঘোড়াশালে ধর্ষণের শিকার নারী

রাজধানীর মিরপুর থেকে শ্যামলীর উদ্দেশে রওনা হওয়া এক নারীকে রাইড শেয়ারের মোটরসাইকেল চালক ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী নারীর জবানবন্দি অনুযায়ী, ২৮ মে বিকেলে তিনি মিরপুর ১২ নম্বর এলাকা থেকে রওনা দেন। গন্তব্য ছিল শ্যামলী, উদ্দেশ্য চিকিৎসা সেবা নেওয়া।

মোটরসাইকেলে ওঠার পর চালক একটি হেলমেট দেন তাকে, যা পরে পরিধান করেন তিনি। কিন্তু অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তার শরীর অচেতন হয়ে পড়ে। জ্ঞান ফিরলে তিনি নিজেকে আবিষ্কার করেন একটি নির্জন এলাকায়, যা ছিল নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌরসভার পাঁচদোনা এলাকায়। ঘটনাস্থল ছিল এলিট স্টিল লিমিটেডের পাশের একটি কালভার্ট এলাকা।

সেখানে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে চালক মোহাম্মদ শাহপরান। ভুক্তভোগীর কাছে থাকা নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেওয়ার পর মোবাইলের মাধ্যমে তার পরিবারের কাছ থেকেও বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায় করেন ওই চালক। এর পাশাপাশি, নারীর জীবননাশের হুমকিও দেন তিনি।

জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে পুলিশ ঘটনাটি জানতে পারে। এরপর তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ২৯ মে পলাশ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়, যেখানে অভিযুক্ত করা হয় শাহপরানকে এবং অজ্ঞাত আরও দুই ব্যক্তিকে সহায়তাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট অভিযানে নামে। অবশেষে ৩১ মে মধ্যরাতে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে শাহপরানকে গ্রেফতার করা হয়।

রবিবার তাকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেশকাত ইসলামের আদালতে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন শাহপরান। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, ছিনতাই ও ব্ল্যাকমেইলের ধারায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান।

এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নারীর নিরাপত্তা এবং রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলোর দায়িত্ব নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন অনেকে।

পুলিশ জানিয়েছে, বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোর রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া ও ড্রাইভার ভেরিফিকেশন নিয়েও চিন্তা-ভাবনার আহ্বান এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে।

এ ঘটনায় নারীদের একা চলাফেরার নিরাপত্তা নিয়ে আরও একবার আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। প্রশাসনের তৎপরতা ও আদালতের সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই এই ঘটনার পূর্ণ বিচার নিশ্চিত হবে বলে আশা করছে সাধারণ মানুষ।

RELATED NEWS

Latest News