প্যারিস সেন্ট জার্মেইনের (পিএসজি) চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় উদযাপন রক্তাক্ত পরিণতিতে শেষ হয়েছে। ফ্রান্সজুড়ে উদযাপন ঘিরে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় অন্তত দুইজন নিহত এবং ১৯২ জনের বেশি আহত হয়েছেন। পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ৫৫৯ জনকে, যার মধ্যে শুধু প্যারিসেই ধরা পড়েছে ৪৯১ জন।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তর জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ডাক্স শহরে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর ছুরিকাঘাতে নিহত হয়। অন্যদিকে, প্যারিসের দক্ষিণ-পশ্চিমে স্কুটারে চড়ে থাকা এক নারী একটি গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান।
প্যারিসের রাস্তায় উদযাপন রূপ নেয় সহিংসতায়। আগুন ধরানো হয় বেশ কয়েকটি গাড়িতে, পুড়িয়ে ফেলা হয় বাস স্টপ, ফাটিয়ে দেওয়া হয় জানালা ও আশপাশের দোকান। ছোড়া হয় আতশবাজি, ফ্লেয়ার।
শামস এলিসেতে ভিড় সামাল দিতে আগেই ৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করেছিল প্রশাসন। কিন্তু উদযাপন এক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দাঙ্গা পুলিশ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে জল কামান ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে। আর্ক দে ত্রায়ম্ফ এলাকায় প্রবেশ ঠেকাতে রাস্তা অবরোধ করা হয়।
ঘটনার পরদিন নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়। মেট্রো সিকিউরিটি ব্যারিকেড ও পুলিশের যানবাহনের মাধ্যমে এলিসে এলাকা ঘিরে ফেলা হয়। এরপরও অনেক উৎসাহী দর্শক সকার তারকাদের এক নজর দেখতে ওই এলাকায় জড়ো হন।
আরও পড়ুন:
এই উদযাপন শুধু প্যারিসেই সীমাবদ্ধ ছিল না। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় গ্রেনোবলে পিএসজি সমর্থকদের ভিড়ের ওপর একটি গাড়ি উঠে গেলে একই পরিবারের চারজন আহত হন, যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।
এ ঘটনায় অনেক নাগরিক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একজন বলেন, “আমরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উদযাপন করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সহিংসতা হওয়ায় নিরাপত্তার আশঙ্কায় নিয়ে যেতে পারিনি।”
ফ্রান্সের পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এত বড় ধরনের জনসমাগমে সহিংসতা রোধে প্রশাসনের প্রস্তুতি আরও কার্যকর হওয়া উচিত ছিল।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় পিএসজির জন্য যেমন গৌরবের, তেমনি এই সহিংসতা পুরো ফরাসি জাতির জন্য এক বেদনাদায়ক মুহূর্ত হয়ে রইল। এখন দেখার বিষয়, ভবিষ্যতে এমন উদযাপন নিরাপদ রাখতে কতটা কার্যকর পদক্ষেপ নেয় ফরাসি প্রশাসন।
