কাশ্মীরের পেহলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ভারতের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নতুন উত্তাপ। সেই উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রবিবার কলকাতায় এক বিজেপি সভায় মমতা ব্যানার্জীর বিরুদ্ধে তুলেছেন একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ।
অমিত শাহ অভিযোগ করেন, “মমতা ব্যানার্জী বাংলার সীমান্ত বাংলাদেশিদের জন্য খুলে দিয়েছেন। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তিনি কখনোই সফল হবেন না। বিজেপি ক্ষমতায় আসলে তবেই এই প্রবণতা বন্ধ হবে।”
তিনি আরও দাবি করেন, তৃণমূল সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে বিএসএফকে সীমান্ত অঞ্চলে প্রয়োজনীয় জমি দিচ্ছে না, যাতে সীমান্তে পর্যাপ্ত নজরদারি চালানো না যায়। এর ফলে বেড়ে যাচ্ছে অবৈধ অনুপ্রবেশ।
বক্তৃতায় তিনি উল্লেখ করেন, “তৃণমূল কংগ্রেস চায় না অনুপ্রবেশ বন্ধ হোক। তারা মুসলিম ভোট ব্যাংক ধরে রাখতেই এসব করছে। এমনকি অপারেশন সিদুর এবং ওয়াকআপ সংশোধনী আইনের বিরোধিতাও করছে কেবল ধর্মীয় তোষণ নীতির কারণে।”
‘অপারেশন সিদুর’ একটি সাম্প্রতিক উদ্যোগ, যার উদ্দেশ্য কাশ্মীরের হামলার প্রেক্ষিতে হিন্দু নারীদের ধর্মীয় মর্যাদা রক্ষা করা। বিজেপির মতে, এই উদ্যোগের বিরোধিতা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। অমিত শাহ বলেন, “মমতা দিদি দেশের মা ও বোনদের অপমান করছেন, বাংলার মানুষ ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এর জবাব দেবে।”
অন্যদিকে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী অভিযোগ করেন, বিজেপি রাজনৈতিক ফায়দা নিতে ধর্মীয় ইস্যুগুলোকে ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে রাজ্যকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে। অপারেশন সিদুর নিয়ে তারা রাজনীতি করছে।”
এর আগেও ১৯ মে আলিপুরদুয়ারের এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মমতা ব্যানার্জীর বিরুদ্ধে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেন। সেই ঘটনার জেরে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে যে উত্তাপ বাড়ছে, তা দিনের পর দিন স্পষ্ট হয়ে উঠছে। দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তির এই পাল্টাপাল্টি বক্তব্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে আরও বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার, উভয় পক্ষেরই রাজনৈতিক কৌশল ও বিবৃতি জাতীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করছে।
