ডেপ্রবা ডেস্ক; ঢাকা, ১লা জুন ২০২৫: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে বলে জানা গেছে। অনুমোদন পেলে বিচার কার্যক্রম শুরু হবে, যা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার হতে পারে।
এই অভিযোগের পেছনে রয়েছে জুলাই মাসে সংঘটিত সহিংসতা, যেখানে শিক্ষার্থী ও সাধারণ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল। ১২ মে তদন্ত সংস্থা একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করে, যেখানে শেখ হাসিনাকে ঘটনার কেন্দ্রীয় নির্দেশদাতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
প্রধান প্রসিকিউটর মোঃ তাজুল ইসলাম জানান, “এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আরও দুইজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।”
প্রথম অভিযোগটি হচ্ছে ১৪ জুলাই একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার “উস্কানিমূলক বক্তব্য”। সেখানে তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের “রাজাকারের বাচ্চা” আখ্যা দিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকার দলীয় সংগঠনগুলোর আক্রমণকে উসকে দেন বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
দ্বিতীয় অভিযোগটি আরও সরাসরি। তদন্তকারীরা বলছেন, শেখ হাসিনার বেশ কিছু টেলিফোন কথোপকথনের অডিও রেকর্ড রয়েছে, যেখানে তিনি হেলিকপ্টার, ড্রোন এবং সাঁজোয়া যান ব্যবহারে নিরীহ বিক্ষোভকারীদের “সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন” করার নির্দেশ দেন।
বাকি তিনটি অভিযোগ নির্দিষ্ট ঘটনার ভিত্তিতে তৈরি। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এসব ঘটনার পেছনেও ছিল প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ নির্দেশ।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে প্রায় ১,৫০০ জন নিহত, ২৫,০০০ এর বেশি মানুষ গুলিবিদ্ধ ও আহত, নারীদের ওপর সহিংসতা, লাশ পুড়িয়ে ফেলা এবং আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা না দিতে সরাসরি বাধা দেওয়ার ঘটনা। এমনকি বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা নিজে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতের অনুমোদন পেলে, এই মামলার বিচার কার্যক্রম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আওতায় শুরু হবে।
সরকারি বা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ প্রতিবেদন বা মামলার বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি।