স্পোর্টস ডেস্ক; ঢাকা, ১লা জুন ২০২৫: বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে প্রথম দিনেই আমিনুল ইসলাম বুলবুল জানিয়ে দিলেন—সময় নষ্টের প্রশ্নই আসে না।
সকালে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে এসে কাজ শুরু করেন নতুন সভাপতি। চারপাশে ছিল উৎসবের আমেজ, কিন্তু বুলবুল ছিলেন মনোযোগী। লক্ষ্য ছিল একটাই—বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দেওয়া দেশের প্রতিটি কোণে।
“ঢাকাকেন্দ্রিকতা কমাতে হবে,” বলেন বুলবুল। “২০০০ সালে যখন আমরা টেস্ট মর্যাদা পাই, তখন আইসিসিকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে ক্রিকেটকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেব। এবার সময় এসেছে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের।”
বুলবুলের মূল পরিকল্পনায় রয়েছে আঞ্চলিক ক্রিকেট বডি গঠন। দীর্ঘ ১২ বছরের নেতৃত্বে থাকা সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও এটি বাস্তবায়ন করতে পারেননি।
কিন্তু বুলবুল শুধু পরিকল্পনা নয়, কাঠামো নিয়েই এসেছেন। “ফ্রেমওয়ার্ক প্রস্তুত,” জানালেন তিনি। “কালই বোর্ডে উপস্থাপন করব।”
তিনটি প্রধান স্তম্ভে গড়ে উঠবে এই পরিকল্পনা:
সারাদেশব্যাপী কোচিং নেটওয়ার্ক:
“প্রতিটি জেলায় প্রশিক্ষিত কোচ থাকবে,” বলেন বুলবুল। “একজন কোচ যেভাবে প্রতিভা চেনে, সাধারণ মানুষ তা পারে না।”স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিভা শনাক্তকরণ:
খেলোয়াড়দের আর ঢাকায় আসতে হবে না। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেই তুলে আনা হবে সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারদের।কমিউনিটি ভিত্তিক প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট:
স্কুল, কলেজ, উপজেলা—যেখানেই সুযোগ আছে, সেখানেই হবে নিয়মিত প্রতিযোগিতা। “ফান ক্রিকেট হবে, কমিউনিটি ক্রিকেট থাকবে, কিন্তু সেই ক্রিকেট থেকেও আমরা প্রতিযোগিতামূলক একটা কাঠামো বানাতে চাই,” বলেন বুলবুল।
মাঠের ক্রিকেট নিয়ে বুলবুলের অভিজ্ঞতা দীর্ঘদিনের। তিনি আইসিসির এশিয়া অঞ্চলের ডেভেলপমেন্ট অফিসার ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ভিক্টোরিয়া থেকে লেভেল ১, ২ ও ৩ কোচিং সার্টিফিকেট পেয়েছেন। সিডনি এবং মেলবোর্নের ক্লাবেও কোচিং করিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
এই অভিজ্ঞতাগুলো এবার তিনি কাজে লাগাতে চান নিজের দেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে।
দায়িত্ব নিয়ে প্রথম দিনেই দৃঢ় সংকল্প প্রকাশ করেছেন বুলবুল। “চেষ্টা কঠিন হবে,” তিনি স্বীকার করেন। “কিন্তু আমি প্রস্তুত।”
দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা অনেকদিন পর আশার আলো দেখছেন। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ থাকলেও বুলবুলের আন্তরিকতা প্রথম দিনেই আলাদা করে নজর কেড়েছে।
এই পরিবর্তন কতটা বাস্তবে রূপ নেবে, সেটা সময়ই বলবে।
তবে শুরুটা অন্তত সাহসী।