Sunday, June 22, 2025
Homeআন্তর্জাতিকমার্কিন প্রস্তাবে সম্মত ইসরায়েল, তবুও গাজায় থেমে নেই বিমান হামলা

মার্কিন প্রস্তাবে সম্মত ইসরায়েল, তবুও গাজায় থেমে নেই বিমান হামলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে গৃহীত নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইসরায়েল সম্মতি জানিয়েছে। অনেকেই ভেবেছিলেন, হয়তো এবার শান্তির দিকে একধাপ এগোনো গেল। কিন্তু সেই আশা মিলিয়ে যায় মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। গাজায় আবার শুরু হয় বিমান হামলা। রাতভর বোমার শব্দে কেঁপে ওঠে জাবালিয়া ও গাজা সিটি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধ্বংসস্তূপে জীবনের চিহ্ন খুঁজতে দেখা গেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। কেউ bracelets উদ্ধার করছেন, কেউ পুরোনো বালিশ। ফিলিস্তিনির এক যুবক Mahmud Al-Ghoraf বলছিল, “যুদ্ধবিরতির খবর পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম অন্তত একটা রাত নিশ্চিন্তে কাটবে। কিন্তু রাত সাড়ে ১২টার পর চারপাশে শুধু বিস্ফোরণ।”

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাবালিয়ার হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন নারীও রয়েছেন। আহতদের অনেকেই এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে।

নতুন এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ৬০ দিনের জন্য অস্ত্রবিরতি কার্যকর হবে। প্রথম সপ্তাহে হামাস ২৮ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে। জীবিত বা মৃত, উভয়ই থাকতে পারে সেই তালিকায়। এর বদলে ইসরায়েল ছেড়ে দেবে ১,২৩৬ জন ফিলিস্তিনি বন্দি এবং ফেরত দেবে ১৮০ জন মৃতদেহ।

এছাড়া মানবিক সহায়তার পথও খুলে দেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্র, মিশর এবং কাতার এই চুক্তির গ্যারান্টি দেবে বলে জানানো হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই পরিকল্পনার পেছনে রয়েছেন।

তবে হামাস বলছে, তারা এখনো প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছে। শুক্রবার কিংবা শনিবারের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের জবাব দেওয়া হতে পারে। রয়টার্সকে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় হামাসের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, প্রস্তাবের বর্তমান রূপ গাজায় আরও প্রাণহানির কারণ হতে পারে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজার দক্ষিণে খান ইউনিস এলাকায় তারা এখনো অভিযানে নিয়োজিত। এক ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, সেনারা এলাকায় প্রবেশ করছে এবং অভিযান চালাচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

গাজার বাসিন্দারা হতাশ। অনেকেই বলছেন, “আমরা আর মুসলিম কিংবা আরব দেশগুলোর কাছে আহ্বান জানাই না। এখন আমরা চাই, পৃথিবীর প্রতিটি বিবেকবান মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়াক।”

এটাই প্রথম নয়। এর আগেও মার্চ মাসে একবার যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়েছিল, যা দুই মাস স্থায়ী ছিল। তারপর আবার হামলা শুরু হয়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, বলছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

খাবার নেই, পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই। দিনের পর দিন টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। হাসপাতালগুলো ভেঙে পড়েছে। অনেক পরিবার সন্তান হারিয়েছে, কেউ খুঁজে পায়নি প্রিয়জনের দেহও।

যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এলেও গাজার আকাশ এখনো শান্ত নয়।

তারা আর প্রতিশ্রুতিতে ভরসা রাখতে পারছে না।

কারণ, এখনও বোমা পড়ছে।

RELATED NEWS

Latest News