ঢাকা, ৩১ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদকে কুষ্টিয়ায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনী। গ্রেফতারের সময় উদ্ধার করা হয়েছে পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩ রাউন্ড গুলি ও একটি স্যাটেলাইট ফোন। তাদের বিরুদ্ধে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগসহ রয় গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হয়ে কাজ করার তথ্য উঠে এসেছে।
গ্রেফতারির পর রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে সুব্রত বাহিনীর সহযোগী শুটার আরাফাত ও শরীফকেও গ্রেফতার করা হয়।
আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার ভেরিফায়েড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন, ২০০১ সালে বিএনপি সরকারের সময় শীর্ষ ২৩ সন্ত্রাসীর তালিকায় সুব্রত বাইন প্রথম স্থানে ছিলেন। বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে ওই তালিকার শীর্ষ অপরাধীদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।
তালিকা থেকে পালানোর জন্য সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ ভারতের পট খালি সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে যায়। পরবর্তীতে যশোরে ফিরে স্থানীয় সহযোগীদের মাধ্যমে চাঁদাবাজি চালাতে থাকে। কলকাতায় গ্রেফতার হওয়ার পর নানা তৎপরতায় মুক্তি পায় সুব্রত।
জুলকারনাইন সায়েরের বরাতে জানা যায়, তৎকালীন কলকাতার পুলিশ কমিশনার এস কে চক্রবর্তীর নির্দেশে রয় গোয়েন্দা সংস্থা ও ভারতের মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ এবং তাদের সহযোগীদের বিভিন্ন কমান্ডো প্রশিক্ষণ দেয়।
২০০৩ সালে সুব্রত ঢাকায় এসে একাধিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্দেশে কলকাতায় সন্ত্রাসীদের আটকের অভিযান শুরু হলেও সুব্রতকে ধরতে পারেনি সিআইডি। পরে ভারতীয় গোয়েন্দাদের সাহায্যে সুব্রত ‘আলী মোহাম্মদ’ নামে ভুয়া পাসপোর্ট বানিয়ে বিদেশে চলে যায়।
আরও পড়ুন:
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলকাতার এসটিএফ তাকে সিলেটের সীমান্ত দিয়ে র্যাবের হাতে হস্তান্তর করে। তাকে নতুন মিশন দেয়ার সময় পরিবারের জন্য কানাডায় স্থায়ী বন্দোবস্তের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্রজনতার আন্দোলনের ফলে সরকার পতনের পর রয় সংস্থার নির্দেশে সুব্রত বাইন প্রকাশ্যে আসে এবং পুনরায় রয় গোয়েন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে।
এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পলাতক আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের যোগাযোগ নেপালের পলাতক সন্ত্রাসী লেদার লিটনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় বলে সূত্রের খবর।
গ্রেফতারের পর এই তথ্যগুলো সামনে আসায় দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো জোরালো তদন্তে জড়িত রয়েছে।