ঢাকা, ৩০ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের অবদান আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে এবং জাতিসংঘ মিশনে ধারাবাহিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, এই অঙ্গীকার মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও সাংবিধানিক নীতির ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সেনাপ্রধান।
তিনি জানান, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে এখন পর্যন্ত অংশগ্রহণ করতে গিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর ১৬৮ জন সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁদের এই আত্মত্যাগ জাতি চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণে রাখবে।
বর্তমানে ৯টি শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ৫ হাজার ১১৮ জন শান্তিরক্ষী কর্মরত আছেন। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর ৪ হাজার ৮৮০ জন, নৌবাহিনীর ৩৪৩ জন, বিমানবাহিনীর ৩৯৬ জন ও পুলিশ বাহিনীর ১৯৯ জন রয়েছেন।
সেনাপ্রধান জানান, শান্তিরক্ষী বাহিনীতে নারীদেরও উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৬৪৫ জন নারী শান্তিরক্ষী মিশনে অংশ নিয়েছেন এবং বর্তমানে ৪৪৪ জন নারী সদস্য সক্রিয়ভাবে কর্মরত।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা উন্নত প্রশিক্ষণ ও নৈতিক মান বজায় রেখে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বে দায়িত্ব পালন করে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কঙ্গোতে হেলিকপ্টার কন্টিনজেন্ট মোতায়েন করেছে এবং পেরু সেনাবাহিনীর জন্য নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়কারী যান অনুদান হিসেবে দিয়েছে।”
এছাড়া সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছে সেনাবাহিনী, যা স্থানীয় জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে। ক্লিনিক উদ্বোধনে সে দেশের রাষ্ট্রপতি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইস, ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী এবং অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে ঢাকার তেজগাঁও ও বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে শান্তিরক্ষী দৌড় ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। এতে জাতিসংঘ প্রতিনিধি, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ এবং বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন।
সেনাপ্রধান বলেন, “বাংলাদেশ সবসময় শান্তির পক্ষে থাকবে এবং জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখে যাবে।”