বাংলাদেশ আইএলওর (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) সব ১০টি মৌলিক সনদ অনুসমর্থনকারী প্রথম এশীয় দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থনেও প্রথম অবস্থানে রয়েছে দেশটি।
বৃহস্পতিবার সংস্থাটি বাংলাদেশের এই অনুসমর্থনকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করে জানায়, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, শ্রমিকদের মর্যাদা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এটি বড় অগ্রগতি।
জেনেভায় আইএলও সদর দফতরে শ্রম, কর্মসংস্থান ও নৌপরিবহন উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন আইএলও মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ উংবোকে তিনটি সনদের অনুসমর্থনপত্র হস্তান্তর করেন।
সেগুলো হলো:
কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সনদ ১৯৮১ (নং ১৫৫),
নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য উন্নয়ন কাঠামো সনদ ২০০৬ (নং ১৮৭),
হয়রানি ও সহিংসতা নিরসন সনদ ২০১৯ (নং ১৯০)।
আইএলও জানায়, এসব অনুসমর্থনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে দ্বিতীয় দেশ হিসেবে সব মৌলিক সনদ অনুসমর্থন করল। এর আগে ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধনী) অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রয়োগ করা হয়, যা আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে জাতীয় আইনকে আরও ঘনিষ্ঠ করে।
সংশোধনীতে বৈষম্য, সহিংসতা ও হয়রানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং শ্রমিকদের ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে প্রতিশোধভীতিহীনভাবে সরে যাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে আইএলও কার্যালয়ের কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাক্স তুনিয়ন বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই সনদগুলোর অনুসমর্থন নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করবে। সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধে অগ্রগতি নারীদের অংশগ্রহণও বাড়াবে। এতে বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল বাণিজ্য অংশীদার ও বিনিয়োগবান্ধব দেশ হিসেবে আরও শক্ত অবস্থান পাবে।
আইএলও বলছে, এসব অনুসমর্থন dignified কাজের পরিবেশ গড়তে বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির প্রমাণ। একইসঙ্গে মানবাধিকারসম্পন্ন কর্মপরিবেশ প্রদর্শন বাণিজ্য চুক্তি ও বৈশ্বিক সরবরাহচেইনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
এই সনদগুলোর মধ্যে ১৫৫ ও ১৮৭ নম্বর সনদ কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রতিরোধমূলক সংস্কৃতি গড়ে তোলার কাঠামো তৈরি করে, যেখানে সরকার, নিয়োগকর্তা ও শ্রমিক—তিন পক্ষের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।
১৯০ নম্বর সনদটি কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি, বিশেষভাবে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি, যা সব ধরনের আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক শ্রমিককে সুরক্ষা দেয়।
