ঢাকা, ৩০ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : ভারতের পরিচালিত ‘অপারেশন সিন্দুর’ অভিযানের ২২ দিন পর মুখ খুললেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। আজারবাইজানে এক সফরে তিনি বলেন, ভারতের ব্রহ্মোস মিসাইল হামলার সময় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত ছিল। এই মন্তব্যে কার্যত পাকিস্তানের সামরিক দুর্বলতা স্বীকার করলেন তিনি।
গত মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগামে একটি জঙ্গি হামলার পর ভারত সীমান্ত পেরিয়ে নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালায়। এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল মুজাফফরাবাদ, কিলে, পিম্বার এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে অবস্থিত জঙ্গি স্থাপনাগুলো। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের লক্ষ্য ছিল কেবল সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলো, পাকিস্তান সেনাবাহিনী নয়।
শেহবাজ শরিফ বলেন, “আমরা ঠিক করেছিলাম ফজরের নামাজের পর সকাল ৪টা ৩০ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ করব। কিন্তু তার আগেই ভারত আবারও ব্রহ্মোস মিসাইল হামলা চালায়, যা রাওয়ালপিন্ডিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানে।”
এই হামলার পর পাকিস্তানের সেনাবাহিনী পাল্টা প্রতিক্রিয়ার চেষ্টা করলেও ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তা প্রতিহত করে। ভারত এরপর আরও ১১টি লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল হামলা চালায়, যার মধ্যে ছিল কয়েকটি সামরিক ঘাঁটিও।
চূড়ান্ত এই সংঘর্ষের চার দিন পর পাকিস্তান শান্তির প্রস্তাব নিয়ে ভারতের ডিজিএমও-র (ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন) সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারা স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে সব ধরনের হামলা বন্ধে সম্মত হয়। এর মধ্য দিয়ে চার দিনের টানা সামরিক উত্তেজনার অবসান ঘটে।
আরও পড়ুন:
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এই নির্ভুল ও পূর্ব পরিকল্পিত হামলা শুধু সামরিক কৌশলের দিক থেকেই নয়, কূটনৈতিকভাবেও এক বড় বার্তা দেয়। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী যেভাবে প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন তাদের সেনাবাহিনী প্রস্তুত ছিল না, তা সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।
দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা কমে আসলেও ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখনও নাজুক। এ ধরনের অভিযান এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়া ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।