Tuesday, November 18, 2025
Homeজাতীয়চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা ২০২৭ সালের মধ্যে পুরোপুরি নিরসনের পথে, তদারকি কমিটির ঘোষণা

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা ২০২৭ সালের মধ্যে পুরোপুরি নিরসনের পথে, তদারকি কমিটির ঘোষণা

চার মেগা প্রকল্পে ৮৭.৬৫% কাজ সম্পন্ন, এ বছর মাত্র ২৯ স্থানে জলাবদ্ধতা, আগামী বছর ১০টি, ২০২৭-এ শূন্য

দশকের পর দশক ধরে চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কারণ জলাবদ্ধতা ২০২৭ সালের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে নিরসিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে চারটি মেগা প্রকল্পের তদারকি কমিটি।

জানুয়ারিতে গঠিত এবং চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিটি জানায়, চার প্রকল্পে গড় অগ্রগতি ৮৭.৬৫ শতাংশ। ৫ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

এ বছর মৌসুমে উল্লেখযোগ্য উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। ২০১৭-২০২৩ সালে ১১৩টি স্থানে জলাবদ্ধতা হয়েছিল, পানি নামতে ৮-৯ ঘণ্টা লাগত। ২০২৪ সালে ৬২টি স্থানে ৫-৬ ঘণ্টা। এ বছর মাত্র ২৯টি স্থানে জলজট হয় এবং পানি ২-৪ ঘণ্টার মধ্যে নেমে গেছে। কমিটি আগামী বছর মাত্র ১০টি স্থানে ১-২ ঘণ্টার জলাবদ্ধতা এবং ২০২৭ সালে “সম্পূর্ণ নিরসন” প্রত্যাশা করছে।

চারটি প্রকল্পে মোট ব্যয় ১৪,৪০০ কোটি টাকা

  • সিডিএর সবচেয়ে বড় প্রকল্প (২০১৭): খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন – ৮,৬২৬ কোটি টাকা
  • কর্ণফুলী তীরে ৮.৫৫ কিমি সড়ক নির্মাণ – ২,৭৭৯ কোটি টাকা
  • সিসিসির বড়ইপাড়া-কর্ণফুলী নতুন খাল (২০১৪) – ১,৩৬২ কোটি টাকা
  • পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও ড্রেনেজ প্রকল্প (২০১৯) – ১,৬২০ কোটি টাকা

অক্টোবর পর্যন্ত অগ্রগতি ৩৬টি খালের মধ্যে ২১টি পুরোপুরি, ১০টি ৯০% সম্পন্ন। ১৪টি সিল্ট ট্র্যাপ, ১০৮টি সেতু-কালভার্ট প্রতিস্থাপন, ৫৬৪ কিমি ড্রেন সংস্কার। ৮ কিমি বাঁধ, ৬.৪৪ কিমি ফ্লাডওয়াল, ৩০টি রেগুলেটর নির্মিত।

জলাবদ্ধতার ৮টি মূল কারণ

  • অপরিকল্পিত নগরায়ণে জলাশয় ৪,৬৬১ থেকে ২,৩৯০-এ নেমেছে
  • প্রধান খাল ৭১ থেকে ৫৭-এ
  • পর্যাপ্ত সেকেন্ডারি-টারশিয়ারি ড্রেনেজের অভাব
  • বর্ষায় বালু ফেলে ড্রেন বন্ধ
  • কর্ণফুলীর নাব্যতা হ্রাস

বাস্তবায়নের ৪টি প্রধান বাধা

  • প্রকল্প শেষে সিসিসির রক্ষণাবেক্ষণ সক্ষমতার অভাব
  • রেগুলেটর পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা
  • জনবল-যন্ত্রপাতি-বাজেট অনিশ্চয়তা
  • সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে বিলম্ব

দীর্ঘমেয়াদি টেকসই সমাধানের ৫ সুপারিশ ১. বাকি ২১টি খাল পুনঃখনন ও রক্ষণাবেক্ষণ ২. সব সংস্থাকে ৩৬ খাল, রেগুলেটর ও পাম্প হাউস পরিচালনার জন্য প্রস্তুত করা ৩. কর্ণফুলী নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং ৪. সিসিসির ময়লা অপসারণ সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ৫. সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক-ব্যবসায়ী ও এনজিও-ছাত্রদের সম্পৃক্ত করে সচেতনতা

কমিটির আহ্বায়ক ড. জিয়াউদ্দিন ডেইলি সানকে বলেন, “সমন্বয়ের অভাবই ছিল সবচেয়ে বড় বাধা। আমরা এখন টেকসই সমাধানের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি। ২০২৭ সালের মধ্যে প্রকল্প সমাপ্ত করার লক্ষ্যে আছি।”

সিডিএর মেগা প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফেরদৌস আহমেদ বলেন, “এ বছর মাত্র ১৮টি স্থানে জলাবদ্ধতা হয়েছে, পানি ১-২ ঘণ্টায় নেমে গেছে। চার প্রকল্পের কাজ একসঙ্গে শেষ এবং জনসচেতনতা ছাড়া স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।”

RELATED NEWS

Latest News