প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার পিএস মাহসুদ পুনরায় চালুর সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) পুরনো এই স্টিমারটি সংস্কার করে পর্যটন ও বিনোদনমূলক ভ্রমণের উপযোগী করে তুলবে।
বুধবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন প্রধান উপদেষ্টাকে বিষয়টি অবহিত করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুফতে সিদ্দিকি, নৌপরিবহন সচিব ড. নুরুন্নাহার চৌধুরী এবং বিআইডব্লিউটিসি চেয়ারম্যান মো. সেলিম উল্লাহ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশের নৌযানের নকশা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত, কিন্তু নতুন প্রজন্মের অনেকেই তা জানে না। পুরনো সব নৌযান, বিশেষ করে প্যাডেল স্টিমারগুলো সংরক্ষণে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”
বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা জানান, সংস্কার শেষে পিএস মাহসুদ পুনরায় চালু হলে এটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য বড় আকর্ষণ হয়ে উঠবে। এ নৌযানে ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার, লাইভ বাংলা সংগীত ও সাংস্কৃতিক আয়োজন থাকবে। সপ্তাহের সাত দিনই এ ক্রুজ চলবে, যেখানে পাঁচ ঘণ্টার পূর্ণ ভ্রমণ ছাড়াও দুই থেকে তিন ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত যাত্রার সুযোগ থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এই স্টিমারগুলো যেন তাদের ইতিহাস প্রদর্শন করে। যাত্রীরা জানতে পারবে কবে এটি তৈরি হয়েছিল, তখন ভাড়া কত ছিল, আর কীভাবে তা আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছিল।”
নৌপরিবহন উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “পিএস মাহসুদ কেবল একটি নৌযান নয়, এটি বাংলাদেশের নদীকেন্দ্রিক সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক। আমরা চাই, তরুণ প্রজন্ম নিজের চোখে দেখুক এক সময় নদীই ছিল আমাদের জীবনের কেন্দ্রবিন্দু।”
তিনি আরও জানান, পিএস মাহসুদের পাশাপাশি পিএস অস্ট্রিচ ও পিএস লেপচা নামের আরও দুটি পুরনো স্টিমার সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রামের কাপ্তাই লেকে অনুরূপ একটি পর্যটন স্টিমার সার্ভিস চালুর বিষয়টিও বিবেচনায় আছে।
বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তারা জানান, ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ শিক্ষামূলক ক্রুজ আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে তারা বাংলাদেশের নৌ ঐতিহ্য সম্পর্কে সরাসরি জানতে পারে।
