Sunday, June 22, 2025
Homeজাতীয়বগুড়ায় সেনাবাহিনীর রাতভর মাদকবিরোধী অভিযান, হরিজন কলোনিতে গাঁজা ও দেশীয় মদের ছড়াছড়ি

বগুড়ায় সেনাবাহিনীর রাতভর মাদকবিরোধী অভিযান, হরিজন কলোনিতে গাঁজা ও দেশীয় মদের ছড়াছড়ি

ঢাকা, ২৯ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার হরিজন কলোনিকে ঘিরে রাতভর একটি বড় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুক্রবার রাত ১টা ৪০ মিনিট থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান চলে টানা সকাল পর্যন্ত। বগুড়া সদর ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন সাদিবের নেতৃত্বে ৫০ সদস্যের একটি দল এই অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানে প্রতিটি বাড়িতে অভিযান চালানো হয় এবং প্রায় সব বাড়ি থেকেই দেশীয় মদ, গাঁজা, দেশীয় অস্ত্র যেমন চাপাতি ও ছুরি উদ্ধার করা হয়। অভিযান চলাকালীন অনেক মাদক ব্যবসায়ী নিজ নিজ বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়ে যান। তবে সেনা সদস্যরা তালা ভেঙে প্রতিটি ঘরে ঢুকে মাদকদ্রব্য জব্দ করেন।

এই অভিযান দীর্ঘদিন পর এই এলাকায় এত বড় পরিসরে পরিচালিত হলো। হরিজন কলোনি দীর্ঘদিন ধরে মাদক সরবরাহের অন্যতম উৎস হিসেবে পরিচিত ছিল। স্থানীয়রা বলছেন, মাদকের দৌরাত্ম্যে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে আতঙ্কিত ছিলেন। সেনাবাহিনীর এ অভিযান তাই শহরবাসীর কাছে একটি স্বস্তির বার্তা।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাঁজা ও দেশীয় মদের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ, যা মাদক বিক্রির টাকাই বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেটিও উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া অভিযানে ধরা পড়েছে কয়েকজন কিশোর গ্যাং সদস্যও।

সেনা সূত্রে জানা গেছে, পুরো এলাকা ঘিরে অভিযান চলেছে ঘন্টার পর ঘন্টা। প্রতিটি বাড়ি ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় অভিযান পরিচালনা ছিল চ্যালেঞ্জিং। সেনাবাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে প্রতিটি বাড়ি তল্লাশি করে মাদকদ্রব্য জব্দ করেন।

এ বিষয়ে সেনা ক্যাম্প ইনচার্জ ক্যাপ্টেন সাদিব জানান, অভিযান শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হবে কত পরিমাণ মাদক উদ্ধার হয়েছে এবং কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি জানান, মাদক ও কিশোর গ্যাং দমনে ভবিষ্যতেও এমন অভিযান চলবে।

এই অভিযানকে ঘিরে পুরো এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে। অনেকেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন তৎপরতা এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি এনেছে এবং তারা আশা করছেন এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

হরিজন কলোনির একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “বছরের পর বছর আমরা মাদক নিয়ে ভয় আর আতঙ্কে ছিলাম। সেনাবাহিনীর এই অভিযান যেন স্থায়ী হয়, সেটাই আমাদের চাওয়া।”

সেনাবাহিনীর এই অভিযান শুধু মাদক নয়, একটি সামাজিক বার্তাও বহন করে যে, অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। শহরবাসীও এখন আশাবাদী—মাদকের শেকড় উপড়ে ফেলার এই উদ্যোগ একদিন সফল হবে।

RELATED NEWS

Latest News