মাঠে বাজে ফিল্ডিংয়ের নড়বড়ে শুরুর পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। সিলেট টেস্টের প্রথম দিনে অভিষিক্ত হাসান মুরাদ ও মেহেদী হাসান মিরাজের স্পিন ঘূর্ণিতে আয়ারল্যান্ডকে ৮ উইকেটে ২৭০ রানে আটকে রেখে লড়াইয়ে ফিরেছে স্বাগতিকরা।
দিনশেষে আইরিশদের ইনিংসে ছিল শুরুর প্রতিরোধ, মধ্যভাগে ছন্দপতন এবং শেষের দিকে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। একটা পর্যায়ে ৪ উইকেটে ১৮৪ রানের শক্ত অবস্থানে থাকলেও শেষ সেশনে মাত্র ৮৬ রান যোগ করতে ৪ উইকেট হারায় তারা।
মঙ্গলবার ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবির্নি। তবে প্রথম ওভারেই হাসান মাহমুদের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে শূন্য রানে ফিরে যান তিনি। এরপর পল স্টার্লিং এবং অভিষিক্ত কেড কারমাইকেল বাংলাদেশের বাজে ফিল্ডিংয়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইনিংস মেরামত করেন। দুজনই জীবন পেয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৯৪ রানের জুটি গড়েন।
দুবার জীবন পাওয়া স্টার্লিং বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে ৬৮ বলে অর্ধশতক তুলে নেন। অন্যদিকে, কারমাইকেল তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন। লাঞ্চের আগে স্টার্লিং ৬০ রানে এবং কারমাইকেল ৫৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।
তবে লাঞ্চের পর ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ওভারেই স্টার্লিংকে (৬০) স্লিপে সাদমান ইসলামের ক্যাচ বানান নাহিদ রানা। পরের ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজ ডিআরএসের সাহায্যে হ্যারি টেক্টরকে (১) ফেরান। এই অফ-স্পিনার তার দাপট অব্যাহত রাখেন এবং কারমাইকেলকে (৫৯) ফেরান। শর্ট মিডউইকেটে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচে পরিণত হন তিনি।
চা-বিরতির সময় আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ১৮৪ রান। তবে শেষ সেশনটি ছিল পুরোপুরি বাংলাদেশের স্পিনারদের।
অভিষিক্ত ২৪ বছর বয়সী বাঁ-হাতি স্পিনার হাসান মুরাদ তার দুর্দান্ত স্পেলে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন এবং তুলে নেন নিজের প্রথম টেস্ট উইকেট। তিনি থিতু হয়ে যাওয়া দুই ব্যাটার কার্টিস ক্যাম্পার (৪৪) ও লরকান টাকারকে (৪১) দ্রুত ফিরিয়ে দেন। মেহেদী হাসান মিরাজ তার তৃতীয় শিকার বানান অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকে (৫), যিনি উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে লিটন দাসের চতুর স্টাম্পিংয়ের শিকার হন।
আরেক অভিষিক্ত জর্ডান নিল ব্যারি ম্যাককার্থিকে নিয়ে ৪৮ রানের জুটি গড়ে আয়ারল্যান্ডকে ২৫০ পার করান। তবে দিনের শেষ বলে তাইজুল ইসলাম নিলকে (৩০) এলবিডব্লিউ করে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন।
দিনশেষে মিরাজ ৫০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সবচেয়ে সফল বোলার। অভিষিক্ত মুরাদ ৪৭ রানে ২টি উইকেট নিয়ে মুগ্ধ করেছেন। তাইজুল, হাসান মাহমুদ এবং নাহিদ রানা একটি করে উইকেট পান।
তবে বাংলাদেশের ফিল্ডিং ছিল উদ্বেগের কারণ। সারাদিনে পাঁচটি ক্যাচ ফেলে স্বাগতিকরা, যা আইরিশদের একটি লড়াকু সংগ্রহ গড়তে সাহায্য করেছে।
বুধবার আয়ারল্যান্ড ২৭০ রানে ৮ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করবে। তাদের লক্ষ্য থাকবে স্কোর ৩০০ পার করা, অন্যদিকে বাংলাদেশের লক্ষ্য থাকবে দ্রুত লেজ ছেঁটে ফেলা।
