ঢাকা, ২৯ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫ নিয়ে দেশের প্রশাসনিক কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে চরম অস্থিরতা। সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কর্মবিরতি ও কর্মসূচির কারণে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে সরকারি অফিসপাড়া।
চাকরি অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি কর্মচারীরা সরাসরি রাষ্ট্রযন্ত্রকে হুমকি দিচ্ছেন। আন্দোলনকারীদের একজন জানান, “যে কয়জন সচিব এই আইন প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত, আমরা তাদের পদত্যাগ চাই।” কেউ কেউ সরাসরি তিনদিন ছুটি নিয়ে সিরিয়াল ছুটিতে বসে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সরকার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে সমাধানের পথ খুঁজছে।
অধ্যাদেশে কী আছে?
২০২৫ সালের ২৫ মে জারি করা এই অধ্যাদেশে চার ধরনের অপরাধকে শাস্তিযোগ্য হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এর শাস্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বরখাস্ত, অপসারণ এবং পদের গ্রেড হ্রাস।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া বলেন, “১৯৭৯ সালের স্পেশাল প্রভিশনের কিছু ধারা এখানে আনা হয়েছে। কিন্তু ভাষাগতভাবে ড্রাফটিংয়ে দক্ষতা দেখাতে না পারায় অপপ্রয়োগের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এটি সংবিধানের ১৩৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারি কর্মচারীদের বিশৃঙ্খলা ও জনদুর্ভোগ রোধে একটি কঠোর আইন প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বর্তমান অধ্যাদেশটি কঠোর না হয়ে বরং দমনমূলক হয়ে উঠেছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আলী রেজা বলেন, “অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া এই অধ্যাদেশ জারি করাই সমস্যার মূল। সরকারি কর্মচারীদের মতামত প্রকাশের অধিকার আছে, তবে সচিবালয় অচল করে দেওয়া সঠিক পন্থা নয়।”
দুজন বিশ্লেষকই মনে করেন, রাষ্ট্র ও সমাজের শৃঙ্খলার জন্য আইনের প্রয়োজন থাকলেও তা হতে হবে সময়োপযোগী, অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে এবং যথাযথ প্রেক্ষাপট বিবেচনায়।
এই মুহূর্তে সরকারি কর্মচারীদের দাবি ও সরকারের অবস্থানের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। তবে পরিস্থিতি দ্রুত সামাল না দিলে প্রশাসনিক অচলাবস্থা আরও গভীর হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।