ঢাকা, ২৯ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : বিশ্ব রাজনীতি এক অজানা মোড়ে পৌঁছেছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধ চতুর্থ বছরে গড়ালেও শান্তির কোনো আভাস নেই। বরং সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় এসেছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যে পরিস্থিতি আরও আলোড়িত হয়েছে।
ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগুন নিয়ে খেলছেন। যদিও পুতিন সরাসরি এ বিষয়ে মন্তব্য করেননি, তবে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপ-চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ মন্তব্য করেছেন, ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধই সবচেয়ে ভয়ংকর হবে’।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প এখন এমন এক অবস্থানে পৌঁছেছেন যেখানে তার কৌশল অনেকটা বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মতো। মার্কিন প্রশাসনের বক্তব্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে জড়িত না হলেও ইউক্রেনকে অস্ত্র ও গোয়েন্দা সহায়তা দিয়ে প্রক্সি যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
নরওয়ের সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক গ্লেন ডাইস বলেন, ‘ট্রাম্প রাশিয়ার উপর কোন বাস্তব প্রভাব ফেলতে পারছেন না। বরং তিনিও বাইডেনের মতো যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পথে হাঁটছেন’।
তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়া এখনো সবচেয়ে বড় কার্ডগুলো ধরে রেখেছে। তাদের সামরিক সরঞ্জাম, জনসমর্থন ও উৎপাদন সক্ষমতা পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি’।
সম্প্রতি ইউক্রেনকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের অনুমতি দিয়েছে ইউরোপীয় দেশগুলো। এটি যুদ্ধকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত হঠাৎ করে নেওয়া হয়নি, বরং এটি দীর্ঘ পরিকল্পনার অংশ।
বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগ উপেক্ষা করে যুদ্ধ আরও জটিল করে তুলছে। রাশিয়া পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ইউরোপীয় অঞ্চল লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে পারে।
অধ্যাপক Glenn বলেন, ‘যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে সাধারণত পরাজিত পক্ষের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই এখনই বাস্তবতা মেনে সংলাপে বসা উচিত’।
বিশ্বজুড়ে চলমান উত্তেজনা, আগ্রাসী কূটনীতি এবং সামরিক তৎপরতা পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর এখন এই প্রশ্নে, বিশ্বের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে? শান্তি, না আরও একটি যুদ্ধ?