বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন নেতৃত্ব দেশের ক্রিকেটে বিকেন্দ্রীকরণ, সমতা ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনার ওপর জোর দিচ্ছে। নতুন বোর্ড দেশের প্রতিটি অঞ্চলে প্রতিভা বিকাশের পাশাপাশি নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে চায়।
রবিবার শেষ হওয়া ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট কনফারেন্স’-এর সমাপনী দিনে বিসিবি পরিচালক রুবাবা দৌলা ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ রূপরেখা তুলে ধরেন। তারা জানান, ক্রিকেটকে জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে এবং এর মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন ও সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে।
নবনির্বাচিত পরিচালক রুবাবা দৌলা বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো ক্রিকেটকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, যেখানে এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো বিশ্বের জন্য একটি মানদণ্ড হবে।”
তিনি বলেন, “আমাদের খেলোয়াড়রা নারী হোক বা পুরুষ—সবার জন্য সমান সুযোগ, অবকাঠামো, প্রশিক্ষণ ও মানসিক দৃঢ়তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।”
রুবাবা দৌলা আরও বলেন, “আমরা হয়রানির বিষয়ে শূন্য সহনশীলতা বজায় রাখব। নারী বা পুরুষ—সবার জন্য নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ তৈরি করব।”
তিনি আহ্বান জানান, সমাজে ভারসাম্য ও সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে যৌথভাবে দায়িত্ব নিতে হবে।
একই অনুষ্ঠানে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “আমাদের সবসময় ভাবতে হবে—পাঁচ, দশ বা পনেরো বছর পর আমরা কোথায় থাকতে চাই। আজই তার বীজ বপন করতে হবে।”
তিনি জানান, সরকার ক্রিকেটের বিকেন্দ্রীকরণে জোর দিচ্ছে, যাতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও খেলাধুলার সুযোগ তৈরি হয়। আসিফ বলেন, “টিম পারফরম্যান্স তাৎক্ষণিক আলোচনার বিষয় হলেও প্রকৃত সাফল্য নির্ভর করে দীর্ঘমেয়াদি নীতিমালা ও তরুণ প্রতিভা বিকাশের ওপর।”
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ স্পোর্টস ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে স্পোর্টস সায়েন্স ও বায়োমেকানিকসের উন্নত প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে, যাতে খেলোয়াড়দের আর বিদেশে গিয়ে প্রস্তুতি নিতে না হয়।
চট্টগ্রাম পাহাড়ি অঞ্চলে আঞ্চলিক বিকেএসপি কেন্দ্র গঠন ও বিদ্যমান অবকাঠামো আধুনিকায়নের পরিকল্পনাও রয়েছে। এর লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক মানের সুবিধা প্রদান করা, যাতে বাংলাদেশি অ্যাথলেটরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে না থাকে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, “আমরা এমনভাবে খেলোয়াড়দের প্রস্তুত করতে চাই, যাতে তারা আন্তর্জাতিক মঞ্চে কখনো সুযোগ বা সুবিধার অভাবে পিছিয়ে না পড়ে।”
রুবাবা দৌলা সমাপনী বক্তব্যে বলেন, “আমরা সততা ও সহমর্মিতার সঙ্গে এগিয়ে যাব—এভাবেই আমরা ক্রিকেটকে সামনে নিয়ে যাব।”
নতুন নেতৃত্বের এই দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ ক্রিকেট আরও বিস্তৃত, সমতা-ভিত্তিক ও টেকসই রূপ নিতে পারে বলে আশা করছে ক্রিকেট মহল।
