লোকসভায় বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী রোববার অভিযোগ করেন, নির্বাচক তালিকার স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) ভোট চুরি আড়াল করার এবং তা প্রাতিষ্ঠানিক করার চেষ্টা।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কংগ্রেস নেতা বলেন, হরিয়ানার মতো মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং ছত্তিশগড়েও ভোট চুরি হয়েছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
রাহুল বলেন, ভোট চুরি একটি সমস্যা। এখন এসআইআর এটিকে আড়াল করে ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক করার চেষ্টা।
শনিবার নর্মদাপুরম জেলার পচমাড়ি পাহাড়ি শহরে মধ্যপ্রদেশ জেলা কংগ্রেস সভাপতিদের প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দিতে পৌঁছান রাহুল।
নির্বাচন কমিশনের এসআইআর গত ৪ নভেম্বর নয়টি রাজ্য এবং তিন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে শুরু হয়েছে। এই বিশাল কর্মসূচিতে ৩২১ জেলা এবং ১৮৪৩ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রায় ৫১ কোটি ভোটারকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
রাহুল অভিযোগ করেন, কয়েকদিন আগে হরিয়ানা নিয়ে উপস্থাপনা দিয়েছি। স্পষ্ট দেখেছি ভোট চুরি হয়েছে। ২৫ লাখ ভোট চুরি হয়েছে, প্রতি আটটির মধ্যে একটি ভোট চুরি হয়েছে।
তথ্য দেখে আমি বিশ্বাস করি, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং ছত্তিশগড়েও একই ঘটেছে। এটি বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা।
আমাদের কাছে আরো প্রমাণ রয়েছে, ধীরে ধীরে দেব। কিন্তু আমার সমস্যা ভোট চুরি। এসআইআর এখন আড়াল করে ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক করার চেষ্টা।
ভবিষ্যতে আরো বিস্তারিত প্রকাশ করবেন কি না জানতে চাইলে রাহুল বলেন, আমাদের কাছে অনেক বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। এখন শুধু সামান্য দেখানো হয়েছে।
কিন্তু আমার সমস্যা হলো গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ হচ্ছে, আম্বেডকরের সংবিধানের ওপর আক্রমণ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি, অমিত শাহ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার যৌথভাবে এটি করছেন। এতে দেশ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভারত মাতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস জেলা সভাপতিদের প্রশিক্ষণ নিয়ে ভালো সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
এসআইআরের জন্য নির্বাচন কমিশন ৫.৩ লাখের বেশি বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও), ১০৪৪৮ জন নির্বাচন নিবন্ধন কর্মকর্তা এবং ৩২১ জন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে নিয়োগ করেছে। এছাড়া রাজনৈতিক দলের ৭.৬৪ লাখ বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ) বিএলওদের সহায়তা করছেন।
কমিশন ৯ ডিসেম্বর খসড়া নির্বাচক তালিকা প্রকাশ করবে। চূড়ান্ত তালিকা ৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হবে।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা সম্প্রতি বলেন, রাহুল গান্ধী অতীত নির্বাচনে অপবিত্রতা তুলে ধরেন কিন্তু নির্বাচক তালিকা পরিষ্কারের লক্ষ্যে এসআইআরের বিরোধিতা করেন।
রাহুল ২০২৪ হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচন চুরি হয়েছে বলে দাবি করেন। নির্বাচক তালিকার তথ্য তুলে ধরে ২৫ লাখ ভুয়া এন্ট্রি এবং কমিশন বিজেপির সঙ্গে যোগসাজশে জয় নিশ্চিত করেছে বলে অভিযোগ করেন।
তবে কমিশন রাহুলের ভোট কারচুপির অভিযোগ অমূলক বলে জানিয়েছে। হরিয়ানায় নির্বাচক তালিকার বিরুদ্ধে কোনো আপিল দায়ের হয়নি এবং একাধিক ভোট দেওয়ার কোনো অভিযোগ ওঠেনি।
