মনোরম সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আবার ফিরছে টেস্ট ক্রিকেট। বাংলাদেশ আগামীকাল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলতে নামবে। চা বাগান আর টিলামালায় ঘেরা ভেন্যুটি সর্বশেষ চলতি বছরের এপ্রিল মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট আয়োজন করেছিল। এর মাঝে টি২০ পর্ব সেরে আবারও উত্তরপূর্বের শান্ত পরিবেশে ফিরল লাল বলের লড়াই।
রবিবার উজ্জ্বল আকাশের নিচে বাংলাদেশ দল পূর্ণাঙ্গ অনুশীলন সেরেছে। হালকা ফুটবল দিয়ে শরীর গরম করে শুরু হয় দিন, এরপরই দক্ষতা ও কৌশলচর্চায় মনোযোগ। প্রধান কোচ ফিল সিমন্স সাইডলাইনে থেকে তত্ত্বাবধান করেন, আর সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন নজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, মাহমুদুল হাসান জয়, সাদমান ইসলাম ও মোমিনুল হকের সঙ্গে স্পিনের বিপক্ষে ফুটওয়ার্ক ও টাইমিংয়ে নির্দিষ্ট ড্রিল চালান।
মাঠের এক কোণে সদ্য নিয়োগ পাওয়া ব্যাটিং কোচ মোহাম্মদ আশরাফুল শান্ত, লিটন, সাদমান, জয় ও মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে স্লিপ ক্যাচিং ক্লিনিক নেন। সাবেক অধিনায়ক খুঁটিনাটি টেকনিক আর পজিশনিং হাতে-কলমে দেখান, সিমন্স কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেন।
সালাউদ্দিন গ্রানাইটস ক্লাব নেটে উইকেটকিপার ব্যাটার জাকার আলি এনিককে নিয়ে আলাদা করে ইম্প্রোভাইজেশন ও স্পিন আক্রমণে প্রতিআক্রমণের অনুশীলন করান। পরে লিটন ও জাকার দুজনই পরিস্থিতি অনুযায়ী দ্রুত রান তোলার কিছু সৃজনশীল শটের ড্রিল করেন। ইঙ্গিত মিলছে, এবার ব্যাটিংয়ে ইতিবাচকতা বাড়াতে চায় বাংলাদেশ।
শীর্ষক্রমের শান্ত, মোমিনুল, জয় ও সাদমানকে বারবার একান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়। সাদমান ও জয় ইনিংসের সূচনায় নামার সম্ভাবনা, নতুন বলের সঙ্গে তাঁদের লড়াই স্বাগতিকদের শুরুটা অনেকাংশে নির্ধারণ করবে।
বোলিং নেটে হাসান মুরাদ, তাইজুল ইসলাম ও মিরাজ লম্বা স্পেলে লাইন দৈর্ঘ্য ও সূক্ষ্ম ভেরিয়েশনে কাজ করেন। পেসাররা নাহিদকে কেন্দ্র করে নতুন বলে জয় ও সাদমানের রক্ষণাত্মক কৌশল পরীক্ষা করেন। কাজের বণ্টন দেখে বোঝা যায়, উইকেট ঘষে গেলে স্পিনেই ভরসা রাখার পরিকল্পনা আছে বাংলাদেশের।
আরো পড়ুন: সুরমা তীরে আলী আমজাদের ঘড়িঘরে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড টেস্ট ট্রফির উন্মোচন
প্রতিপক্ষ শিবিরে আত্মবিশ্বাসের সুর। আয়ারল্যান্ডের ব্যাটার হ্যারি টেক্টর বলেন, বাংলাদেশে উইকেট নিয়ে বাড়তি শঙ্কা না করে ম্যাচের সকালে কন্ডিশন বুঝে নেওয়াই উত্তম। তিনি জানান, অনুশীলনে যা করা হয়েছে তার ওপর আস্থা রেখে পারফর্ম করতে চান তারা, এবং সেই উইকেটেই প্রতিপক্ষের চেয়ে ভালো করার লক্ষ্য।
টেক্টর বাংলাদেশের স্পিনের গুরুত্ব মানলেও নিজ দলের হাম্প্রিজ, ম্যাকব্রিন ও হোয়ির স্পিনত্রয়ীর বৈচিত্র্যকে বড় সুবিধা হিসেবে দেখছেন। এটি আয়ারল্যান্ডের মাত্র দ্বিতীয় বহু ম্যাচের টেস্ট সিরিজ, তাই দলে আছে বাড়তি গর্ব ও প্রেরণা।
দুই দলই জানে, দীর্ঘতম ফরম্যাটের ধৈর্য ও শৃঙ্খলা পরীক্ষার মঞ্চ আবারও সিলেট। বিরল সুযোগের এই টেস্টে কন্ডিশন বুঝে সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নই ফল নির্ধারণে বড় ফ্যাক্টর হতে পারে।
