মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন জানুয়ারির অভিষেকের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার নন ইমিগ্রান্ট ভিসা বাতিল করেছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। ওয়াশিংটন এক্সামিনারের প্রথম প্রতিবেদনের পর বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এই বাতিলের তালিকায় বৈধ ভিসাধারী কিছু ব্যক্তিও পড়েছেন বলে জানান তিনি।
কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী ড্রাইভিং আন্ডার দ্য ইনফ্লুয়েন্স ডিইউআই অভিযোগে প্রায় ১৬ হাজার, হামলার অভিযোগে প্রায় ১২ হাজার এবং চুরির অভিযোগে প্রায় ৮ হাজার ভিসা বাতিল করা হয়েছে। এই তিন ধরনের অপরাধ এ বছরের মোট বাতিলের প্রায় অর্ধেকের জন্য দায়ী। পাশাপাশি ভিসা প্রদানে কড়াকড়ি সোশ্যাল মিডিয়া ভেটিং ও বর্ধিত স্ক্রিনিং চালু করা হয়েছে।
আগস্টে স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানায় আইন লঙ্ঘন ও মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থানে থাকার কারণে ৬ হাজারের বেশি স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল করা হয়েছে। অল্প কয়েকটি ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদে সমর্থনের অভিযোগও ছিল। গত মাসে দপ্তর আরও জানায় রক্ষণশীল কর্মী চার্লি কার্ককে লক্ষ্য করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া মন্তব্যের কারণে অন্তত ছয় ব্যক্তির ভিসা বাতিল করা হয়েছে।
মে মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান শত শত থেকে হাজারের কাছাকাছি ব্যক্তির ভিসা বাতিল করা হয়েছে। তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীরাও অন্তর্ভুক্ত। স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাম্প্রতিক নির্দেশনায় বিদেশে কর্মরত কূটনীতিকদের আবেদনকারীদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী মনোভাব বা রাজনৈতিক কর্মসূচির পূর্ব ইতিহাস থাকলে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
প্রশাসনের কর্মকর্তারা আরও বলেছেন স্টুডেন্ট ভিসা এবং গ্রিনকার্ডধারীরাও প্যালেস্টাইনের প্রতি সমর্থন বা গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের ভূমিকার সমালোচনার মতো কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকলে বহিষ্কারের মুখে পড়তে পারেন। তাদের মতে এসব কর্মকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির জন্য হুমকি এবং সেগুলো হামাস সমর্থন হিসেবে দেখা হতে পারে। সমালোচকেরা এটিকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। সরকারপক্ষ বলছে জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষায় কড়াকড়ি প্রয়োজন।
বিশ্লেষকদের মতে নতুন ভেটিং প্রক্রিয়া ও ব্যাপক ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতির বাস্তব প্রয়োগে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে এ ধরনের পদক্ষেপের আইনগত ও মানবাধিকারগত প্রভাব নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত থাকবে বলেও তাদের মন্তব্য।
