Thursday, November 6, 2025
Homeআন্তর্জাতিকঅস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কমদের সামাজিকমাধ্যম নিষেধাজ্ঞায় রেডিট ও কিকও যুক্ত, ১০ ডিসেম্বর...

অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কমদের সামাজিকমাধ্যম নিষেধাজ্ঞায় রেডিট ও কিকও যুক্ত, ১০ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর

নিষেধাজ্ঞায় এখন ৯ প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, এক্স, স্ন্যাপচ্যাট, টিকটক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, থ্রেডস, রেডিট ও কিক। অমান্যে সর্বোচ্চ ৫০ মিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলার জরিমানা। ডিসকর্ড, হোয়াটসঅ্যাপ, লেগো প্লে, রোবলক্স, গুগল ক্লাসরুম ও ইউটিউব কিডস বাদ

অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার সীমিত করতে ঘোষিত বিশ্বের প্রথম ধরনের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় জনপ্রিয় ফোরাম রেডিট ও লাইভস্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম কিককে যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে নিষিদ্ধ প্ল্যাটফর্মের সংখ্যা দাঁড়াল ৯। আগে থেকেই তালিকায় ছিল ফেসবুক, এক্স, স্ন্যাপচ্যাট, টিকটক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ও থ্রেডস। আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে এ ব্যবস্থা কার্যকর হবে।

সরকার জানায়, যেসব প্ল্যাটফর্মের একমাত্র বা প্রধান উদ্দেশ্য অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ সক্ষম করা, সেসবকেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তন বিবেচনায় ভবিষ্যতে আরও প্ল্যাটফর্ম যুক্ত হতে পারে। নিয়ম অমান্য করলে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে সর্বোচ্চ ৫০ মিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলার জরিমানা প্রায় ৩২.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৫.৭ মিলিয়ন পাউন্ড গুনতে হতে পারে।

ইসেফটি কমিশনার জুলি ইনম্যান গ্রান্ট বলেন, “শিশুদের সামাজিকমাধ্যমে প্রবেশ বিলম্বিত করলে তারা ক্ষতিকর ও প্রতারণামূলক ডিজাইনের অদৃশ্য প্রভাব যেমন অস্বচ্ছ অ্যালগরিদম ও অনন্ত স্ক্রল থেকে মুক্ত থেকে শেখার জন্য মূল্যবান সময় পায়।” ফেডারেল কমিউনিকেশন্স মন্ত্রী আনিকা ওয়েলস বলেন, অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো ভয়াবহ মাত্রায় শিশুদের লক্ষ্যভিত্তিকভাবে প্রভাবিত করতে পারে এবং এই নিষেধাজ্ঞা শিশুদের সুরক্ষার জন্য। “আমরা নিখুঁত সমাধান নয়, তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন চাই,” মন্তব্য করেন তিনি।

তবে কীভাবে বয়স যাচাই ও বাস্তবায়ন হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। সম্ভাব্য পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে সরকারি পরিচয়পত্র যাচাই, অভিভাবকের অনুমোদন ও মুখ শনাক্তকরণ প্রযুক্তি। সমালোচকদের মতে, এসব পদ্ধতিতে ডেটা গোপনীয়তা ও বয়স যাচাইয়ের নির্ভুলতা নিয়ে ঝুঁকি ও সীমাবদ্ধতা আছে। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে প্রস্তাবিত প্রতিটি পদ্ধতিরই দুর্বলতা তুলে ধরা হয়েছে।

এদিকে বেশিরভাগ অস্ট্রেলীয় প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক এই নিষেধাজ্ঞার পক্ষে থাকলেও কিছু মানসিক স্বাস্থ্যকর্মী সতর্ক করেছেন যে এতে কিশোররা সংযোগবিচ্ছিন্ন হতে পারে এবং তারা আরও কম নিয়ন্ত্রিত অনলাইন পরিসরে সরে যেতে পারে। তাঁদের মতে, ক্ষতিকর কনটেন্টের ভালো মনিটরিং এবং শিশুদের ওয়েবজীবনের বাস্তবতায় প্রস্তুত করার ওপর সরকারের বেশি জোর দেওয়া উচিত।

ডিসকর্ড ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো মেসেজিং সেবা, লেগো প্লে ও রোবলক্সের মতো গেমিং প্ল্যাটফর্ম, এবং গুগল ক্লাসরুম ও ইউটিউব কিডস নিষেধাজ্ঞায় নেই। ইউটিউবকে প্রথমে ছাড় দেওয়া হলেও গত জুলাইয়ে সরকার সিদ্ধান্ত বদলায়। ১০ থেকে ১৫ বছরের শিশুরা “ক্ষতিকর কনটেন্ট” সবচেয়ে বেশি ইউটিউবেই দেখে এমন তথ্য তুলে ধরে সরকার জানায়, ১৬ বছরের নিচের কিশোররা ইউটিউব ভিডিও দেখতে পারবে, তবে অ্যাকাউন্ট রাখা যাবে না। ফলে আপলোড বা প্ল্যাটফর্মে ইন্টারঅ্যাকশন করা সম্ভব হবে না।

ঘোষণার প্রেক্ষিতে নজর কাড়ে সামাজিকমাধ্যমভিত্তিক এক অস্ট্রেলীয় ইনফ্লুয়েন্সার পরিবারের সিদ্ধান্ত, আসন্ন নিষেধাজ্ঞা এড়াতে তারা যুক্তরাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে, যাতে তাঁদের ১৪ বছর বয়সী কন্যা অনলাইনে কনটেন্ট তৈরি চালিয়ে যেতে পারে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এ উদ্যোগ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, কারণ বাস্তবায়নপদ্ধতি ও কার্যকারিতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।

RELATED NEWS

Latest News