বার্বাডোসের আম্পায়ার গ্রেগরি ব্রাথওয়েট এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা তার উজ্জ্বল আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে আনুষ্ঠানিকভাবে পর্দা টেনেছেন। ৫৫ বছর বয়সী এই প্রবীণ গত মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এবং ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লিউআই) উভয়ের কাছে তার অবসরের ঘোষণা দেন। সিদ্ধান্তটি ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে।
ব্রাথওয়েট তার শান্ত আচরণ এবং তীক্ষ্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য পরিচিত ছিলেন। আম্পায়ার হিসেবে তিনি ১৪টি টেস্ট ম্যাচ, ৭৬টি ওয়ান-ডে ইন্টারন্যাশনাল এবং ৯৫টি টি-টোয়েন্টি ইন্টারন্যাশনালে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার ক্যারিয়ারের অন্যতম উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত এসেছিল ২০১৭ সালে, যখন তিনি লর্ডসে আইসিসি মহিলা বিশ্বকাপ ফাইনালে দায়িত্ব পালন করেন। সেই রোমাঞ্চকর প্রতিযোগিতায় ইংল্যান্ড ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল।
তার সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রতিফলন করে ব্রাথওয়েট বলেন, “আমি শুধু ভেবেছিলাম যে, আমার বয়সের ভিত্তিতে আমি কোথায় আছি তা গুরুত্বসহকারে বসে দেখার এবং কোনো তরুণকে আমার অতিক্রান্ত স্থানের বাইরে উৎকর্ষ অর্জনের সুযোগ দেওয়ার সময় এসেছে কিনা তা বিবেচনা করার সময় এসেছে।”
তার যাত্রা নিয়ে গভীর সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি যোগ করেন, “আমি যা অর্জন করতে পেরেছি তা নিয়ে আমি অত্যন্ত খুশি। এমন একটি যাত্রা শুরু করেছিলাম যা আমি পরিকল্পনা করিনি। আম্পায়ারিং কখনো আমার রাডারে ছিল না। এবং মাঠে সব ফরম্যাট অতিক্রম করার স্তরে পৌঁছাতে পেরেছি, ওডিআই, টি-টোয়েন্টি, টেস্ট ম্যাচ ক্রিকেট। আমি মনে করি যে কেউ প্রাথমিকভাবে আম্পায়ার হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে শুরু করেনি তার জন্য এটি নিজেই একটি সত্যিই দুর্দান্ত অর্জন।”
ব্রাথওয়েট যখন সরে দাঁড়াচ্ছেন, তখন তিনি পেশাদারিত্ব, সংযম এবং সততার একটি উত্তরাধিকার রেখে যাচ্ছেন। এই গুণাবলি দীর্ঘদিন ধরে বৈশ্বিক মঞ্চে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান দায়িত্ব পালনকে সংজ্ঞায়িত করেছে।
তার অবসর বিশ্ব ক্রিকেটে নতুন প্রজন্মের আম্পায়ারদের তাদের চিহ্ন তৈরি করার দরজা খুলে দেয়।
ব্রাথওয়েটের ক্যারিয়ার ক্রিকেট আম্পায়ারিংয়ে একটি অনুপ্রেরণামূলক গল্প। তিনি আম্পায়ার হওয়ার পরিকল্পনা না করেও এই পেশায় এসেছিলেন এবং শীর্ষস্থানে পৌঁছেছিলেন।
তার শান্ত স্বভাব এবং ন্যায়পরায়ণতা তাকে খেলোয়াড় ও দর্শক উভয়ের কাছে সম্মানিত করে তুলেছিল। বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও তিনি তার দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন।
ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্প্রদায় তার অবদানের জন্য তাকে স্মরণ করবে। তার পর্যালোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা খেলার মান উন্নত করেছে।
ব্রাথওয়েটের অবসর ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটে একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি চিহ্নিত করে। তবে তার রেখে যাওয়া উত্তরাধিকার ভবিষ্যত প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।
আম্পায়ার হিসেবে তার যাত্রা প্রমাণ করে যে, সঠিক প্রতিশ্রুতি এবং নিষ্ঠার সঙ্গে যেকোনো ক্ষেত্রে উৎকর্ষ অর্জন সম্ভব, এমনকি যদি তা মূল পরিকল্পনার অংশ না হয়।
