বর্তমান ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সাঁ জারমাঁ গত মৌসুমে রেকর্ড ৮৩৭ মিলিয়ন ইউরো টার্নওভারের কথা জানিয়েছে। মঙ্গলবার বার্ষিক আর্থিক ফল প্রকাশ করে কাতার মালিকানাধীন ক্লাবটি ২০২৪ ২৫ মৌসুমকে খেলাধুলা ও অর্থনীতির দুই দিক থেকেই ঐতিহাসিক আখ্যা দেয়। ক্লাবের ভাষ্য, বাণিজ্যিক আয়ে এসেছে ৩৬৭ মিলিয়ন ইউরো এবং ম্যাচডে ইনকাম টিকিট ও আতিথেয়তা মিলিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৫ মিলিয়ন ইউরোতে।
মোট টার্নওভার আগের মৌসুমের ৮০৬ মিলিয়ন ইউরোর চেয়ে কিছুটা বেশি। ২০২৩ ২৪ মৌসুমে ডেলয়েট ফুটবল মানি লিগে পিএসজি ছিল তৃতীয়, শীর্ষে ছিল রিয়াল মাদ্রিদ এবং দ্বিতীয় ম্যানচেস্টার সিটি। ঐ সময়ে সিটির রাজস্ব ছুঁয়েছিল ৮৩৭.৮ মিলিয়ন ইউরো। পিএসজি জানায়, ২০১১ সালে কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্টস ক্লাবটির দায়িত্ব নেওয়ার আগে বার্ষিক টার্নওভার ছিল ৯৯ মিলিয়ন ইউরো। তারপর থেকে প্রকল্পটি পরিণত হয়েছে এবং ক্লাবের অর্থনৈতিক মডেল এখন বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে সফলদের কাতারে।
খেলোয়াড় বেতনে ব্যয়ের হারও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ২০২৩ ও ২০২৪ সালে কিলিয়ান এমবাপে, নেইমার ও লিওনেল মেসির বিদায়ের পর বেতন খাতে ব্যয় টার্নওভারের ১১১ শতাংশ থেকে কমে ৬৫ শতাংশের নিচে নেমেছে বলে জানায় পিএসজি।
তবে ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিতে দুটি বড় বাধা দেখছে ক্লাব। একদিকে ফরাসি ফুটবলের সামগ্রিক আর্থিক প্রেক্ষাপট এবং লিগ ওয়ানের অভ্যন্তরীণ সম্প্রচার চুক্তি ভেঙে যাওয়ায় সম্প্রচার আয়ে ধাক্কা লেগেছে। অন্যদিকে ৪৮ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার পার্ক দে প্রিন্সেস স্টেডিয়ামের সীমাবদ্ধতা ম্যাচডে আয়ের বিস্তারকে আটকে দিচ্ছে। রিয়াল মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখ, লিভারপুল ও আর্সেনালের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের স্টেডিয়াম বড়। পুনর্নির্মাণ শেষে বার্সেলোনা শিগগিরই ১ লাখ ৫ হাজার ধারণক্ষমতার ক্যাম্প ন্যুতে ফিরবে।
ম্যাচডে আয় বাড়াতে ঐতিহাসিক ঘরের বাইরে যাওয়ার সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছে পিএসজি। পৌরসভার মালিকানাধীন বর্তমান মাঠ ছাড়ার ক্ষেত্রে প্যারিসের শহরতলিতে দুটি সম্ভাব্য সাইট নিয়ে সমীক্ষা চলছে। দক্ষিণে মাসি এবং উত্তর-পশ্চিমে পোয়াসি, যেখানে ক্লাবটি সম্প্রতি নতুন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলেছে। ক্লাবের বিবৃতিতে বলা হয়, ইউরোপের বড় ক্লাবগুলোর সঙ্গে ছোট স্টেডিয়াম নিয়েও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্ভব হলেও ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির জন্য উদ্ভাবন অপরিহার্য।
চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের পুরস্কার অর্থ এবং ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার সাফল্য আয় বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। একই সঙ্গে সম্প্রচার আয়ের ঘাটতি ও স্টেডিয়াম সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে টেকসই প্রবৃদ্ধির পথ খুঁজছে পিএসজি। ক্লাবের মতে, ২০১১ সালের পর থেকে ক্লাবের মূল্যায়ন এবং বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বহু গুণ বেড়েছে, যা আজ পিএসজিকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ক্রীড়া ব্র্যান্ডগুলোর একটি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
