Thursday, October 30, 2025
Homeখেলাধুলাক্রিকেটব্যাটিং বিপর্যয় বাংলাদেশের পুরনো রোগ, অধিনায়কের কণ্ঠে হতাশার সুর

ব্যাটিং বিপর্যয় বাংলাদেশের পুরনো রোগ, অধিনায়কের কণ্ঠে হতাশার সুর

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে হারের পর আবারও আলোচনায় টপ অর্ডারের ব্যর্থতা। লোয়ার অর্ডারের লড়াই যথেষ্ট ছিল না, শামীমের ব্যাটিংয়ে ক্ষুব্ধ লিটন

ম্যাচ শেষে তখন customary করমর্দন পর্ব শেষ। চট্টগ্রামের সাগরিকা স্টেডিয়ামে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শুরুর অপেক্ষায় বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররা। কিন্তু মাঠের এক প্রান্তে তখন ভিন্ন চিত্র। সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন নেটে দীর্ঘক্ষণ কাজ করছিলেন ব্যাটার জাকের আলীকে নিয়ে। দুই ম্যাচের মধ্যে ব্যবধান কম, তাই সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই। এই তাগিদই হয়তো বলে দিচ্ছিল, আগের ম্যাচে ঠিক কী ঘটেছে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেওয়া ১৬৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশ ৫৭ রানে ৫ উইকেট এবং পরে ৭৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে। টপ অর্ডারের এই ভয়াবহ ধ্বসের পর তানজিম হাসান সাকিব ও নাসুম আহমেদের লড়াই শুধু হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১৬ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের সমর্থকদের জন্য এই দৃশ্য নতুন কিছু নয়। ২০২৫ সাল যেন টাইগারদের ব্যাটিং ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে। এই বছর খেলা ২০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের মধ্যে ৬টিতেই ৫০ রানের আগে ৪ উইকেট হারিয়েছে দল। অন্য ৫টি ম্যাচে ৩০ রানের মধ্যে পড়েছে ৩ উইকেট।

বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয় যখন আসে, তখন তা রীতিমতো espectacular হয়ে ওঠে। এতটাই যে, লোয়ার অর্ডারের অবিশ্বাস্য লড়াইও প্রায়শই দলকে পরাজয়ের হাত থেকে বাঁচাতে পারে না। এই বারবার ভেঙে পড়া ব্যাটিং লাইনআপ দলের টপ ও মিডল অর্ডারের ভঙ্গুরতা এবং ব্যাটিং স্থিতিশীলতার জন্য চলমান সংগ্রামের চিত্রই তুলে ধরে।

পরিসংখ্যানও কথা বলছে ব্যাটারদের বিপক্ষে। এই বছর ২৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশের মিডল অর্ডার ব্যাটারদের সম্মিলিত স্ট্রাইক রেট মাত্র ১১৯.৮৩, যা টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন। মিডল অর্ডার থেকে অর্ধশতরান এসেছে মাত্র দুটি: একটি তৌহিদ হৃদয় এবং অন্যটি জাকের আলীর ব্যাট থেকে।

এমনকি বাংলাদেশের চেয়ে অর্ধেকেরও কম ম্যাচ খেলা শ্রীলঙ্কার মিডল অর্ডারও এর চেয়ে ভালো পারফর্ম করেছে। ৭ থেকে ১৫ ওভারের মধ্যে ধারাবাহিক অবদানের অভাব বারবার দলকে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে উঠতে ব্যর্থ করছে।

সোমবার অবশ্য ব্যতিক্রম ছিলেন মূলত বোলার হিসেবে পরিচিত তানজিম হাসান। তার ৩৩ রানের ইনিংসটিই ছিল দলের পক্ষে সর্বোচ্চ। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি হেসে বলেন, “সত্যি বলতে, আমার কাছে এর উত্তর নেই।” তবে তানজিম মনে করেন, পাওয়ারপ্লের পর মিডল অর্ডার ব্যাটারদের আরও বেশি দায়িত্ব নিতে হবে।

আরো পড়ুন: চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টি২০তে ঘুরে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ

এই উদ্বেগের প্রতিধ্বনি শোনা গেছে অধিনায়ক লিটন দাসের কণ্ঠেও। ম্যাচ শেষে শামীম হোসেনের ব্যাটিং নিয়ে তিনি স্পষ্ট হতাশা প্রকাশ করেন। শামীম তার শেষ ১৩ ইনিংসে মাত্র ৬ বার দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছেন। সোমবারও জেসন হোল্ডারের বলে একটি ভুল শট খেলতে গিয়ে মাত্র ১ রানে আউট হন তিনি।

লিটন বলেন, “আমি শামীমের ব্যাটিংয়ে খুবই হতাশ। সে যেভাবে ব্যাট করেছে, তার আরও একটু ভাবা উচিত। আপনি সব সময় এসে শুধু ব্যাটিং উপভোগ করতে পারেন না, আপনাকে দায়িত্বও নিতে হবে।”

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচের আগে প্রশ্ন একটাই: হৃদয়, শামীমরা কি পারবেন নিজেদের ছন্দ খুঁজে পেতে? নাকি এই ব্যাটিং ভঙ্গুরতা দলের অগ্রযাত্রাকে আবারও বাধাগ্রস্ত করবে?

RELATED NEWS

Latest News