Thursday, October 30, 2025
Homeখেলাধুলাক্রিকেটচট্টগ্রামের মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে দীর্ঘদিনের পানিসংকট, স্থায়ী সমাধানে বিসিবির গভীর নলকূপ উদ্যোগ

চট্টগ্রামের মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে দীর্ঘদিনের পানিসংকট, স্থায়ী সমাধানে বিসিবির গভীর নলকূপ উদ্যোগ

স্বাধীন পানি সরবরাহ ব্যবস্থা না থাকায় লবণাক্ততার প্রভাব, ওয়াসা থেকে দৈনিক প্রায় ৪ লাখ লিটার পানি কেনা হয়, ৩ কোটি টাকার প্রকল্পে দুটো স্থানে বোরহোল স্থাপনের পরিকল্পনা

সমুদ্রের নিকটবর্তী অবস্থানের কারণে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দীর্ঘদিন ধরেই পানিসংকট চলছে। স্বাধীন পানি সরবরাহ ব্যবস্থা না থাকায় ভূগর্ভস্থ পানি তোলার সময় লবণাক্ততা দেখা দেয়, যা পিচ ও আউটফিল্ড রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উপযোগী নয়। মাঠ playable রাখতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড গভীর নলকূপের মিঠাপানি ও চট্টগ্রাম ওয়াসা থেকে কেনা পানির ওপর নির্ভর করছে।

বর্তমানে চট্টগ্রাম ওয়াসা থেকে প্রতিদিন প্রায় ৪ লাখ লিটার পানি কেনে বিসিবি, যা ব্যয়বহুল। আবার শহরজুড়ে পানি সংকট দেখা দিলে সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। আশপাশের পুকুর থেকে পানি তুলে এবং সাম্প্রতিক বৃষ্টির পানি কাজে লাগিয়ে আউটফিল্ডে কিছুটা সবুজ ফেরানো গেলেও এসব ব্যবস্থা সাময়িক, দীর্ঘমেয়াদে টেকসই নয় বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।

স্টেডিয়ামটিতে ২০১১ থেকে ২০১২ সময়কালের পর বড় কোনো সংস্কার হয়নি। এর প্রভাব পড়ে ড্রেনেজ ও মাঠের সার্বিক অবস্থায়। নতুন ঘাস বিছানোতে খেলার উপযোগিতা কিছুটা বেড়েছে, তবে স্থায়ী ও নির্ভরযোগ্য পানি সরবরাহ ব্যবস্থাই এখন প্রধান অগ্রাধিকার বলে কর্মকর্তারা জানান।

এই প্রেক্ষাপটে বিসিবি বৈজ্ঞানিক পরামর্শে গভীর নলকূপ স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে, যাতে লবণাক্ততার সমস্যা কমে এবং নিয়মিত পানির উৎস নিশ্চিত হয়। স্টেডিয়াম এলাকার ভেতরে দুইটি স্থানে বোরহোলের জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রকল্পটির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা।

জরুরি পরিস্থিতি সামাল দিতে আগে স্টেডিয়াম এলাকায় একটি পুকুর খনন করা হয়েছিল। তবে তা পর্যাপ্ত নয় বলে মন্তব্য করেন এক কর্মকর্তা। তাঁর ভাষ্য, “তাৎক্ষণিক সংকট মোকাবিলায় আমরা একটি পুকুর খনন করেছিলাম, কিন্তু এই আকারের স্টেডিয়ামের জন্য সেটি কখনোই যথেষ্ট নয়। পুকুরের ধারণক্ষমতা সীমিত।”

প্রাথমিকভাবে কয়েকটি স্থানে নলকূপ খননের চেষ্টা করলে বেশিরভাগ জায়গায় লবণাক্ত পানি পাওয়া যায়। চার থেকে পাঁচটি স্থানে পরীক্ষা শেষে একটি জায়গায় তুলনামূলক স্বচ্ছ পানি মেলে। বর্তমানে প্রাঙ্গণে দুটি বোরহোল বসানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি থেকে ভালো মানের পানি পাওয়া যাচ্ছে, অন্যটি ব্যবহারের আগে কিছু পরিশোধনের প্রয়োজন হবে বলে জানানো হয়েছে।

একজন বিসিবি প্রকৌশলী বলেন, “চূড়ান্ত নকশা ও প্রক্রিয়া নির্ধারণে আমরা অতিরিক্ত পানি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করছি। যত দ্রুত সম্ভব গভীর নলকূপ সমাধান বাস্তবায়ন করতে চাই। চট্টগ্রামে পানির অভাবে আমরা দীর্ঘদিন ভুগছি, স্থায়ী সমাধানই আমাদের লক্ষ্য।”

কর্মকর্তাদের মতে, স্থায়ী পানি সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে উঠলে পিচ ও আউটফিল্ডের মান বজায় রাখা সহজ হবে এবং অপারেশনাল ব্যয়ও নিয়ন্ত্রিত থাকবে। প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও পরীক্ষণ শেষে ধাপে ধাপে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে নেওয়া হবে।

RELATED NEWS

Latest News