বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’ আরও শক্তিশালী হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। মঙ্গলবার এটি অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওডিশা উপকূলের দিকে দ্রুত অগ্রসর হয়, যেখানে ইতিমধ্যে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মন্থা কাকিনাডার কাছ দিয়ে মঙ্গলবার রাতেই স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মাচিলিপটনম থেকে প্রায় ১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং বিশাখাপত্তনম থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড়টির সর্বোচ্চ বেগ ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছেছে। সোমবার রাত থেকেই উপকূলজুড়ে ভারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের কোনাসীমা অঞ্চলে প্রবল বাতাস ও জলোচ্ছ্বাসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। বঙ্গোপসাগরের সাথে গোদাবরীর সংযোগস্থলে বডাসাকুরু এলাকার বালুচর ধুয়ে গেছে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে এবং সাগরের পানি উপকূল ভেতরে ঢুকে পড়েছে।
ওডিশা সরকার আটটি জেলায় — মলকানগিরি, কোরাপুট, নবরঙ্গপুর, রায়গাড়া, গজপতি, গঞ্জাম, কলাহান্ডি ও কন্ধমাল — ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে। মঙ্গলবার থেকে এসব অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি ও প্রবল ঝড়ো হাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দক্ষিণ পশ্চিমবঙ্গেও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে বলে সতর্ক করেছে আইএমডি। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টি ও ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগের বাতাসের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এদিকে তামিলনাড়ুর উত্তরাঞ্চলীয় জেলা চেন্নাই, তিরুভল্লুর, কাঞ্চিপুরম ও রানিপেটে সোমবার থেকেই ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত অবস্থা। আঞ্চলিক আবহাওয়া কেন্দ্র জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মন্থা চেন্নাই থেকে প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার পূর্বে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
আবহাওয়ার অবনতির কারণে আকাশপথ ও রেল যোগাযোগে প্রভাব পড়েছে। বিশাখাপত্তনম ও চেন্নাইয়ের মধ্যে ছয়টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। একাধিক ট্রেন বাতিল বা সংক্ষিপ্ত রুটে পরিচালনা করা হচ্ছে।
আইএমডি উপকূলীয় জেলাগুলোর বাসিন্দাদের সমুদ্র উপকূলে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে এবং মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না নামতে সতর্ক করা হয়েছে।
