Monday, October 27, 2025
Homeজাতীয়বাংলাদেশে ড্রাইভিং স্কুল স্থাপন করবেন জাপানি উদ্যোক্তা মিকি ওয়াতানাবে

বাংলাদেশে ড্রাইভিং স্কুল স্থাপন করবেন জাপানি উদ্যোক্তা মিকি ওয়াতানাবে

জাপানে দক্ষ ড্রাইভার নিয়োগের লক্ষ্যে ১২ হাজার বর্গমিটার জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হবে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

খ্যাতনামা জাপানি উদ্যোক্তা ও রাজনীতিক মিকি ওয়াতানাবে বাংলাদেশে একটি ড্রাইভিং স্কুল স্থাপনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন, যার মাধ্যমে হাজারো দক্ষ ড্রাইভার জাপানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন।

ওয়াতানাবে গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এই ব্যবসায়ী শনিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্র অতিথি ভবন জামুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বৈঠককালে এই ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, “আমরা এখন প্রায় ১২ হাজার বর্গমিটার জায়গা খুঁজছি যেখানে ড্রাইভিং স্কুলটি স্থাপন করা হবে।” তিনি জানান, জাপানে দক্ষ ড্রাইভারের চাহিদা ব্যাপক এবং বাংলাদেশ এই দক্ষ জনশক্তি সরবরাহে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন যেন ঢাকা শহরের উপকণ্ঠে উপযুক্ত জমি চিহ্নিত করা হয়।

প্রেস উইংয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই বৈঠকটি অধ্যাপক ইউনুসের মে মাসে জাপান সফরের ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠিত হয়। সেই সফরে জাপানি উদ্যোক্তারা আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ কর্মী নেওয়ার বিষয়ে চুক্তি সই করেছিলেন।

ওয়াতানাবে জানান, তিনি ইতিমধ্যে মুন্সিগঞ্জ জেলার মনোহরদীতে একটি ভাষা প্রশিক্ষণ একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছেন, যেখানে অন্তত তিন হাজার বাংলাদেশিকে প্রশিক্ষণ দিয়ে জাপানে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি বলেন, “৫২ জন কর্মী ইতোমধ্যে নির্মাণ ও কৃষি খাতে কাজের জন্য জাপানে গেছেন।”

বর্তমানে প্রতি ব্যাচে ৪০ জন করে শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন এবং ধীরে ধীরে একাডেমির পরিধি বাড়ানো হবে বলে জানান ওয়াতানাবে।

প্রধান উপদেষ্টা জাপানি শিষ্টাচার, সংস্কৃতি ও আচরণবিধি শেখানোর গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “জাপানি সংস্কৃতি ও শিষ্টাচার শেখানো প্রশিক্ষণের অবিচ্ছেদ্য অংশ হওয়া উচিত। এতে তারা জাপানে গিয়ে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারবে।”

প্রধান উপদেষ্টা আরও প্রস্তাব দেন যাতে ওয়াতানাবে কৃষি, নির্মাণ, নার্সিং ও কেয়ারগিভিং প্রশিক্ষণেও সম্প্রসারণ করেন, কারণ এসব খাতে দক্ষ কর্মীরা জাপানে উচ্চ বেতন পান।

ওয়াতানাবে প্রশংসা করেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে স্থাপিত “জাপান সেল”-এর, যা জাপানি বিনিয়োগকারী ও বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় বাড়াচ্ছে।

তিনি ঢাকায় বা এর আশেপাশে আরেকটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করেন, যাতে জাপানি কোম্পানিগুলো সহজে পরিদর্শন করতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন যেন কোনো অব্যবহৃত আইটি পার্ক দ্রুত শনাক্ত করে সেটিকে জাপানি ভাষা ও পেশাগত প্রশিক্ষণকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারযোগ্য করা যায়।

অধ্যাপক ইউনুস বলেন, “আমরা একসঙ্গে কাজ করব—ড্রাইভিং স্কুলের জন্য জমি ও নতুন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জায়গা আমরা খুঁজে বের করব।”

প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত সচিব সাজীব খাইরুল ইসলাম জানান, খুব শিগগিরই জাপানি বিনিয়োগকারীদের সম্ভাব্য আইটি পার্ক পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।

অধ্যাপক ইউনুস জাপানি ভাষা দক্ষতা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর আহ্বান জানান, কারণ বর্তমানে বছরে মাত্র দুইবার এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, যা বাড়তি চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট নয়।

বৈঠকে এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।

RELATED NEWS

Latest News